বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সারের সচেতনতার বড়ই অভাব। নারীরা লজ্জা ও ভয়ে স্তন ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করান না। এমনকি অনেকে জানার পরও চিকিৎসা করাতে যান না। যারা চিকিৎসকের কাছ যান, তাদের বড় অংশই শেষ পর্যায়ে আসেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ১০ অক্টোবর স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে এ গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান এবং বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, বাংলাদেশ কী পরিমাণ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। লজ্জা ও ভয়ে নারীরা স্তন ক্যান্সার পরীক্ষার জন্য স্ক্যানিং করেন না। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ক্যান্সারের সরকারি চিকিৎসার সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। বাংলাদেশে মাত্র আটটি মেডিকেল কলেজে রেডিও থেরাপির ব্যবস্থা আছে। স্তন ক্যান্সারসহ সব ক্যান্সার চিকিৎসার সমন্বিত চিকিৎসাসেবা জনগণের কাছে নেয়ার জন্য ঢাকার বাইরে আটটি বিভাগে একটি করে আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।
Advertisement
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় হিসেবে তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধের তিনটি পর্যায় বা স্তর আছে। প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য দুটি বিষয়ে জোর দিতে হয়। এক স্তন ক্যান্সারের রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে চলা এবং দ্বিতীয়ত এ থেকে সুরক্ষাকারী অভ্যাস গ্রহণ করা।
দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিরোধের মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও চিকিৎসায় সুস্থতা। আর তৃতীয় পর্যায়ের প্রতিরোধের ব্যবস্থা হলো- অনিরাময়যোগ্য ক্যান্সার রোগী যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন তার জীবনযাত্রার মান যথাসম্ভব বজায় রাখার জন্য ক্যান্সারজনিত তার কষ্ট লাঘবে পেলিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন সেবা।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গাইনি বিভাগের প্রধান সাবেরা খাতুন, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ফাতেমা আশরাফ, সাবেক সচিব আনোয়ারুল আলম, অধ্যাপক ডা. মোজাহারুল হক, রোটারি ইন্টারন্যাশনালের গভর্নর রোটারি ইন্টারন্যাশনালের গভর্নর এফ এইচ আরিফ প্রমুখ।
বিএসএমএমইউ’র গাইনি বিভাগের প্রধান সাবেরা খাতুন বলেন, আমাদের দেশে স্তন ক্যান্সার গবেষণার মতো তেমন কিছু নেই। অথচ স্তন ক্যান্সারের গবেষণার প্রয়োজন অনেক বেশি। কিন্তু আমরা গবেষণার কাজটা করতে পারছি না। সেই সঙ্গে স্তন ক্যান্সার নিয়ে নারীদের সচেতনতারও বড়ই অভাব রয়েছে। স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
Advertisement
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ফাতেমা আশরাফ বলেন, হাসপাতালে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে যে নারীরা আছেন, তাদের সবাই কি স্তন ক্যান্সার স্কেনিং করছেন? যারা হাসপাতালে কাজ করেন তারাই এটি করছেন না।
এমএএস/জেডএ/আইআই