ভারতের গুজরাট প্রদেশের দলিতরা নিজেদের গোঁফসহ ছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল বানিয়ে এক অভিনব প্রতিবাদ শুরু করেছেন। গত কয়েকদিনে গোঁফ রাখার অজুহাতে উচ্চবর্ণের লোকজন অন্তত চারজন দলিতের ওপর হামলা চালিয়েছে। খবর বিবিসির।
Advertisement
গত সপ্তাহে এক দলিত যুবক গরবা নাচ দেখতে গিয়ে খুন হন। একের পর এক হামলার দায় নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কয়েকজন দলিত যুবক।
তারা বলছেন, দলিতদের ওপরে আক্রমণের কোনও সাজা হয় না বিজেপি শাসিত গুজরাটে। অথচ সেই রাজ্যেরই সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তিত্ব মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এই দলিতদেরই আপন করে নিয়ে হরিজন নাম দিয়েছিলেন।
১৭ বছর বয়সী দলিত ছাত্র দিগন্ত মাহেরিয়া মঙ্গলবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মোটরসাইকেলে চেপে এসে তার পিঠে ব্লেড চালিয়ে দেয়। তার এক ভাই গত সপ্তাহে মার খেয়েছে। এদের অপরাধ দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও এরা কেন গোঁফ রেখেছে।
Advertisement
সন্দেহ করা হচ্ছে আক্রমণকারীরা রাজপুত সম্প্রদায়ের। যারা মনে করে যে দলিত শ্রেণীর মানুষের গোঁফ রাখার অধিকার নেই। তারপর থেকেই গুজরাটের দলিতরা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ছবি বদলে দিতে শুরু করেছেন। প্রোফাইল পিকচারে গোঁফ সহকারে ছবি দিচ্ছেন তারা।
দলিতদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন জিগনেশ মেওয়ানী। তিনি বিবিসিকে বলেন, গত বছর উনাতে চারজন দলিতকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। এই ঘটনায় সারা দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল।
কিন্তু গুজরাটে দলিতদের ওপরে তার থেকে বহু গুন বেশী অত্যাচার প্রতিদিন ঘটছে। আর এত বছর ধরে সেইসব অত্যাচারের কোনো বিচারও হয় নি। রাজ্যে দলিতদের ওপর যদি অত্যাচারের ১শ ঘটনা ঘটে তাহলে এর মধ্যে ৯৭ জন অভিযুক্তই ছাড়া পেয়ে যান।
তিনি বলেন, সব ঘটনাতেই উচ্চবর্ণের লোকেরা জড়িত। তাই বিজেপি শাসিত সরকার বলতে গেলে কিছুই করে না। এতদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ এবারে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে।
Advertisement
দলিতদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণের প্রতিবাদে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে একটি মিছিল থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন মেওয়ানীসহ আরও অনেকে। বেশ কয়েকদিন তাকে জেলও খাটতে হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র গোঁফ রাখার কারণে উচ্চবর্ণের লোকরা দলিতদের মারছে। নবরাত্রির উৎসবে গরবা নাচ দেখতে গিয়েছিল বলে এক দলিত যুবককে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিয়ে মেরে ফেলা হয়।
টিটিএন/আরআইপি