ব্যাংকের আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড নির্দেশনা মানছে না দেশি-বিদেশি ১০ বাণিজ্যিক ব্যাংক। ৫ শতাংশ পয়েন্টের মধ্যে স্প্রেড সীমাবদ্ধ রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বারবার বলে আসলেও তা উপেক্ষা করেছে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, ৫টি দেশি বেসরকারি ও ৫টি বিদেশি ব্যাংকের স্প্রেড ৫ শতাংশের উপরে রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৬ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের। এরপরই রয়েছে বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। ব্যাংকটির স্প্রেডের পরিমাণ ৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
আগস্ট মাসের স্প্রেড প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্যাংকগুলোর জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে স্প্রেড দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকের ২ দশমিক ৭০ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকের ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকের ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে।
ব্যাংক খাতের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের নিচে রাখার নির্দেশনা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। কিন্তু সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগস্ট মাস শেষে দেশি-বিদেশি মিলে ১০টি ব্যাংক এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদের ব্যবধান নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামাতে পারেনি।
Advertisement
দেশি ৫ ব্যাংক
দেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নিচ্ছে গড়ে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ হারে আর ঋণ দিচ্ছে ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দেশীয় বেসরকারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। এ ব্যাংকের স্প্রেডের পরিমাণ ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। তৃতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে সিটি ব্যাংকের ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ ও উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে ইউনিয়ন ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
বিদেশি ৫ ব্যাংক
বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, সিটিব্যাংক এনএ ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, ওরি ব্যাংক ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও এইচএসবিসি ব্যাংকের স্প্রেড রয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান স্প্রেডসীমা ৫ শতাংশের নিচে আনতে বরাবরই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। তারপরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের স্প্রেডসীমা ৫ শতাংশের পয়েন্টের ওপরে অবস্থান করছে। যারা এ নিয়ম মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, আমানতের উপর সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংকটির গড় আমানত হার ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়া এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান ৮ শতাংশের উপরে আমানতের সুদ দিচ্ছে।
এসআই/জেডএ/বিএ