আন্তর্জাতিক

মোদিকে সন্ত্রাসী বললেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘নির্বাচিত সন্ত্রাসবাদী’ এবং আরএসএসকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে আখ্যা দিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ। জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পাকিস্তানকে ধুয়ে দিয়ে আসার এ ধরনের মন্তব্য করেন তিনি।

Advertisement

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস পাচারের অভিযোগ এনেছিলেন সুষমা স্বরাজ। কিন্তু ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীই তো একজন সন্ত্রাসবাদী। গুজরাটে খুন হওয়া মুসলিমদের রক্ত লেগে আছে তার হাতে।

তিনি আরও বলেন, আরএসএস নামে একটি জঙ্গি সংগঠন ভারত শাসন করছে। সেখানে মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে গোরক্ষার নামে। শুধু মুসলিম নয়, অত্যাচার ও শোষণের মুখে খ্রিস্টান এবং দলিতরাও। উত্তরপ্রদেশে যে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তার পিছনেও রয়েছে সাম্প্রদায়িক ও উচ্চবর্ণের হিন্দুদের সমর্থন।

তার এ ধরনের বক্তব্যে মোদি সরকারের সুবিধা হবে বলেই মনে করছে কূটনীতি ও রাজনীতির জগতের অনেকে। মাঝেমাঝেই বিদেশ সফরে যাওয়ার ফলে ঘরোয়া রাজনীতিতে সমালোচনার মুখে পড়লেও, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজস্ব একটা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন মোদি।

Advertisement

ফলে পাকিস্তানের এই আক্রমণ যতটা না তার ভাবমূর্তির ক্ষতি করবে, তার চেয়ে বেশি সুবিধা করে দেবে ভারতের এই প্রধানমন্ত্রীর। লোকসভা ভোটের আর দু’বছর বাকি। উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে তার দেয়া প্রতিশ্রুতির হিসেব চাইতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলো। ভোট যত এগোবে, সরকারের বিরুদ্ধে প্রত্যাশাপূরণ না হওয়ার ক্ষোভ তত বাড়বে।

এমনিতেই মোদি সরকার নিজেদের হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। তার ওপর পাকিস্তানের সঙ্গে তিক্ততায় জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলতে আরও কাজে দেবে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য।

শোনা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের ভোটের আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযান বা সীমিত কোনো সংঘাতেও যেতে পারেন মোদি।

গত মাসে জাতিসংঘের অধিবেশনে কাশ্মির প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। হালে পানি পায়নি দেশটি। উল্টো গাজার ছবিকে কাশ্মিরিদের উপরে ভারতের নির্যাতনের নজির হিসবে তুলে ধরে দেশের বিড়ম্বনাই বাড়িয়েছেন পাক দূত মালিহা লোধি।

Advertisement

পাকিস্তানে সন্ত্রাসের ব্যাপারে সুষমার ধারালো ও জোরালো আক্রমণই বরং গুরুত্ব পেয়েছে বিশ্বমঞ্চে। যার জবাব পাকিস্তান দিয়ে উঠতে পারছে না কোনো ভাবেই। খাজার বিষোদ্গার তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

এই তিক্ততায় সংশয় বাড়ছে কূলভূষণের প্রাণরক্ষা নিয়ে। ভারতের এই প্রাক্তন নৌ-সেনা কর্মকর্তাকে প্রাণদণ্ড শুনিয়েছে পাক সেনা আদালত। বিষয়টি বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারাধীন।

কুলভূষণ বন্দি রয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে। অন্য দিকে, ২০১৪ সালে পোশোয়ারের স্কুলে হামলা চালিয়েছিল যে জঙ্গিরা, তারা এখন আফগানিস্তানে বন্দি।

তাদের মুক্তির বিনিময়ে কুলভূষণকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়েছিল। খাজাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

কেএ/জেআইএম