যানজট নিরসন ও অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে বগুড়ায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার বগুড়া শহরের সাতমাথায় হাজার হাজার মানুষের সামনে বেশ কিছু রিকশা আটক করে হাতুড়ি ও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
Advertisement
বুধবার দিনব্যাপী বগুড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং পৌরসভা যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালে বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। অভিযানে ২০টি ব্যাটারিচালিত রিকশা আটকের পর ধ্বংস করে পৌর কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঘোষণা ছাড়াই রিকশা আটক এবং তা গুঁড়িয়ে দেয়ার খবর শুনে সন্ধ্যায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান অটোরিকশা চালক সুভাষ চন্দ্র। তার বাড়ি শহরের নাটাইপাড়া এলাকায়।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলী মুন রাজীব জানিয়েছেন, বগুড়া বিআরটিসির (আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ি রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিসহ সকল প্রকার অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে এই অভিযান চলবে। যারা অবৈধ যানবাহন তৈরি ও বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালান হবে।
Advertisement
তবে সাতমাথায় এই অভিযান চলাকালেই লাইসেন্সবিহীন সিএনজি ও অটোভ্যানে চললেও সেসব আটক করা হয়নি। এমনকি অভিযানের খবর আগে থেকেই টের পেয়ে যাওয়ায় শহরের গোহাইল রোড, সুত্রাপুরে অবস্থিত ব্যাটারি রিক্সা বিক্রির অর্ধশতাধিক দোকান বন্ধ করে ফেলা হয়। সেখানে দোকান বন্ধ থাকায় কোনো অভিযান চলেনি। এসব দোকানেই প্রতিদিন কয়েকশত নতুন ব্যাটারি রিকশা বিক্রি করা হয়।
নিজের চোখের সামনে পরিবারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশা ভেঙে চুড়মাড় করতে দেখে চালক মোনায়েম মিয়া। তার বাড়ি সোনাতলা উপজেলায়। জানালেন ৮ জনের পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিল এটি। স্থানীয় একটি এনজিও থেকে লোন তুলে রিকশা কিনে তিনি নিজেই চালাতেন। লোনের কিস্তিও শোধ করা হতো এই টাকা থেকেই। এখন না খেয়ে মরতে হবে। আরও কিস্তির টাকা না দিলে এনজিও লোকেরা তাদের অবস্থা খারাপ করে দেবে।
এদিকে হঠাৎ করেই প্রশাসনের এই ধরনের অভিযানের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত রিকশা মালিকরা বগুড়া শহরে মিছিল বের করে। তারা স্লোগান দিয়ে বলে দোষ করছে যারা প্রকাশ্যে এসব বিক্রি করছে। আমরা পেটের তাগিদে রিকশা কিনে বাঁচার চেষ্টা করছি। এখন প্রশাসনকে আমাদের পরিবারের দেখভাল করতে হবে।
অভিযান চলাকালে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলী মুন রাজীব, বগুড়া পৌরসভারর মেয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল মণ্ডলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
Advertisement
এমএএস/জেআইএম