অসুস্থতার জন্য প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার এক মাসের ছুটির কারণে সমালোচনার সৃষ্টি হওয়ায় বিপদে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
Advertisement
হঠাৎ করে প্রধান বিচারপতির ছুটি নেয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে মনে হয় কিনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘অসুস্থতা কখনই স্বাভাবিক হয় না। প্লিজ আন্ডারস্ট্যান্ড দিস। উনি কিন্তু বলেছেন যে উনি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ক্যান্সার থেকে সুস্থ হতে অনেক দিন লাগে। বলেছেন ক্যান্সার থেকে তার নানাবিধ জটিলতা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সেই ক্ষেত্রে যদি একটা ক্রপআপ করে একটা সময়ে। এটা তো আমার জন্য ইয়ে না...। এখন তো আমি দেখছি উনি অসুস্থ হয়ে আমাকে বিপদে ফেলেছেন’ বলেই হেসে দেন আইনমন্ত্রী।
এরপর যদি উনি আর ফিরে না আসেন, তখন সরকারের বিরুদ্ধে বিতর্ক উঠতে পারে সেটা কীভাবে মোকাবেলা করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘তিনি এখন পদত্যাগপত্র দেননি। আমি এই স্পেকুলেশনের (জল্পনা) মধ্যে যেতে চাই না। আমি আশা করি, ওনার অসুস্থতা এ রকম হবে না যে উনি পদত্যাগপত্র দেবেন। আমি আশা করি উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’ ছুটি আরও বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোন বিষয়ে স্পেকুলেট করতে রাজি না।’
Advertisement
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে রায় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী প্রবীণতম বিচারপতিকে অস্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সংবিধানে লেখা নেই যে তিনি বিতর্কিত হলে করা যাবে না। আমাকে সংবিধান মানতে হবে।’
অসুস্থতায় কোনো শূন্যতা তৈরি হল কিনা- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘কোথাও কোনো শূন্যতা তৈরি হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে বিচারব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে শূন্যতা হতো। সেটা তো হয়নি। অস্থায়ী বিচারপতি নিয়োগের পর বিচার বিভাগ ও আপিল বিভাগ সঠিকভাবে চলছে। তাই কোনো শূন্যতা নেই।’
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়ে এভাবে ছুটি নেয়ায় প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান আইনমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার এক মাসের (৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত) ছুটিতে যাওয়া নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকারের চাপের মুখে প্রধান বিচারপতিকে ছুটি নিতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি (প্রধান বিচারপতি) এখন সরকারের কাঠগড়ায়। এস কে সিনহা ছুটিতে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
Advertisement
আরএমএম/ওআর/আরআইপি