একের পর এক হিট ছবি। তাবড় নায়িকাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বক্স অফিস মাত। তবুও বলি-দুনিয়ার এলিট মহলে তার জায়গা নেই। অতীত যেন তার পিছু ছাড়ছে না। তাই সানি লিওন মানেই পর্নস্টার। পর পর সাফল্য এলেও বলিউড তাকে এখনো বাঁকা চোখেই দেখে। আর পাঁচটা নায়িকা পর্দায় খোলামেলা পোশাক বা সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করলে কোনো আলোচনা নেই। সানি শরীর দেখালেই দোষ। তাই সানির স্থান সেই দ্বিতীয় সারিতেই। একটু ভেবে দেখলে দেখবেন, সানি কিন্তু একজন ভালো নায়িকার মতোই স্বাধীনচেতা, বিশ্বাসী, স্মার্ট, হট হলেও নিজের অতি সাধারণ জীবন যাপনেই অভ্যস্ত।লিওন নামটা শুনলেই যাদের চোখ কপালে ওঠে বা নাক উঁচু করেন, তাদের জন্য ১০টি কারণ, যা পড়ার পর মনে হবে, বলিউডে সানির সেই রকমই সম্মান ও গুরুত্ব পাওয়া উচিত, যা অন্যান্য প্রথম সারির নায়িকারা পেয়ে থাকেন। সানি লিওন অসম্ভব স্বাধীনচেতা একজন নারী। তিনি নিজের জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিজেই নেন এবং তা ভুল হলেও অনুতাপ করেন না। তিনি পর্নোগ্রাফিতে অভিনয় করেছেন নিজের ইচ্ছেয়, যখন ইচ্ছে হয়নি, ছেড়ে দিয়েছেন। তার জন্য তিনি কখনওই অনুতাপ বোধ করেন না।সানি কাউকে ভয় করেন না। তার যা ঠিক মনে হয়, সেটাই করেন। লোকে কী ভাবলো, তা নিয়ে মাথা ঘামান না। সানির ক্যারিয়ার লক্ষ্য করে দেখুন, বহু সমালোচনা, কটাক্ষ সহ্য করেও কিন্তু ধীর ও স্থির। তিনি জানেন একদিন তিনি তার প্রাপ্য সম্মান পাবেন।সানি অতীতে যে কাজটি করতেন, তাতেও কিন্তু তিনি সাফল্যের শীর্ষে ছিলেন। অ্যাডাল্ট ইন্ডাস্ট্রি হলেও, ওটা একটা পেশা। ব্যাংকিং, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতোই। অ্যাডাল্ট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছোট নয়। বিশাল তার ব্যপ্তি। সেই পেশায় তিনি সাফল্যের শীর্ষে ছিলেন। অর্থাৎ এর থেকে প্রমাণিত, সানি লিওন নিজের পেশাকে সম্মান দেন ও ভালোবাসেন। তাই পেশাও তাকে খ্যাতি এনে দেয় অচিরেই।জানেন কি, `হেট স্টোরি ২` ছবির সেটে কিছু বাচ্চা ছেলে-মেয়ে ছিল বলে, `পিঙ্ক লিপস` আইটেম সং-এর শুটিং বন্ধ করে দেন। ওই শ্যুটিংয়ের দৃশ্য শিশুমনে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই সানি ওই সিদ্ধান্ত নেন। আসলে মিডিয়া সব সময়ই সানিকে সেক্স সিম্বল হিসেবে প্রচার করে। সানির মানবিক দিকগুলি নিয়ে কোনো প্রচার হয় না।সাবেক পর্নস্টার ছাড়াও সানি একজন সফল উদ্যোগপতি। সান লাস্ট পিকচারস নামে সানি ও তার স্বামী ড্যানিয়েলের একটি অ্যাডাল্ট ফিল্ম স্টুডিয়ো রয়েছে। খুব শিগগিরই তারা অন্তর্বাস ও হীরার ব্যবসা শুরু করতে চলেছেন। বলিউডের ক`জন নায়িকা ব্যবসায় এতো দক্ষ?যৌন সঙ্গী বেছে নেয়ার স্বাধীনতা প্রত্যেকের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। সানির যখন ১৮ বছর বয়স, তখন তিনি আবিষ্কার করেন, তিনি উভকামী। অত্যন্ত সততার সঙ্গে তিনি নিজের যৌনচেতনা সর্বসমক্ষে স্বীকার করেছেন। অনেকেই কিন্তু বিষয়টি গোপনেই রাখেন। সানির এই ব্যবহার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।সানির ক্যারিয়ার গ্রাফ অন্যান্য নায়িকাদের থেকে একেবারেই ভিন্ন ধারার। প্রথমে পর্ন ফিল্ম। সেখান থেকে মূলধারার বলিউড ছবি। অ্যাডাল্ট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকে সানিকে দেখেই বলিউডে সাফল্য পাওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।আচ্ছা, পর্নস্টাররা যদি অভিনয়ে দক্ষ হন, তাহলে বলিউড কেন তাকে গ্রহণ করবো না? আর যদি আপনি মনে করেন, সানি লিওনকে জায়গা দিয়ে বলিউড আপনার সন্তানকে অকালপক্ক করে তুলছে, তাহলে একটু চোখ-কান খোলা রাখলে বুঝতে পারবেন, আপনার সন্তান আগে থেকেই সানিকে চিনতে পারে। কারণ ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা।সানি কিন্তু কখনোই অপ্রয়োজনীয়ভাবে লাইম লাইটে থাকেন না। সব সময়ই লো প্রোফাইল ইমেজ বজায় রাখেন। আসলে সানিকে যাবতীয় বাধা সহ্য করতে হয় তার অতীতের জন্য। সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক থেকেও সানি যথেষ্ট তৎপর। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির হয়ে প্রচারে সব সময় সানিকে দেখা যায়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।সব কিছুর ঊর্ধ্বে পরিবারের প্রতি সানির দায়বদ্ধতা। পেশাকে ভালোবেসেও স্বামী ড্যানিয়েল ছাড়া তার কোনো পুরুষসঙ্গী নেই। যাকে বলে `One man Woman`। ড্যানিয়েলও সানিকে যেকোনো সিদ্ধান্ত ও কাজে সাহায্য করেন। দায়িত্বশীল স্বামীর মতোই স্ত্রীর পাশে দাঁড়ান।বিএ
Advertisement