যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট হিউ কলেজ কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সু চির পোট্রেট সরিয়ে নিয়েছে। এবার অক্সফোর্ড শহরের নগর কাউন্সিল সু চিকে দেয়া সম্মান প্রত্যাহার করে নেয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
Advertisement
অক্সফোর্ড নগর সরকারের প্রধান বলছেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি যে আচরণ করছে, তাতে সুচি আর 'ফ্রিডম অব দ্য সিটি' নামের ওই পুরস্কারের যোগ্য নন। ২০ বছর আগে তাকে ওই সম্মান দেয়া হয়েছিল।
মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল ১৯৯৭ সালে তাকে এই সম্মাননা জানিয়েছিল।
এদিকে সেন্ট হিউ কলেজ থেকে ১৯৬৭ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন সু চি। সেখানে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতির ওপর পড়াশোনা করেছেন।
Advertisement
গৃহবন্দি হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিও দেয় অক্সফোর্ড। ওই ডিগ্রি তিনি গ্রহণ করেন মুক্তি পাওয়ার পর, ২০১২ সালে। ওই বছর সু চির ৬৭তম জন্মদিনও অক্সফোর্ডেই বেশ আড়ম্বর করে পালন করা হয়। কলেজটির মূল ভবনের প্রবেশদ্বারে রাখা হয়েছিল সু চির প্রতিকৃতি।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই নেত্রীর সমালোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক গণঅাদালত তাকে গণহত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
গত ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে জীবন বাঁচাতে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমারেরর সেনাবাহিনীর তাণ্ডবকে পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত জাতিগত নিধনযজ্ঞের উদাহরণের সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ।
Advertisement
এরকম একটি পরিস্থিতিতে অক্সফোর্ডের সেন্ট হিউ কলেজ কর্তৃপক্ষ সু চির প্রতিকৃতি সরিয়ে নিয়ে গুদামে রেখে দিয়েছে। সু চির প্রতিকৃতি প্রদর্শনের জায়গায় জাপানি একটি চিত্রকর্ম বসানো হবে।
তবে সু চির প্রতিকৃতি সরানোর ব্যাপারে কোনো কারণ দেখায়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। অক্সফোর্ড শহরের সাথে নোবেল শান্তি পুরস্কা র বিজয়ী অং সান সুচির নাম জড়িয়ে আছে, কারণ তিনি সেখানে পড়াশোনা করেছিলেন। পরে তিনি তার শিক্ষাবিদ স্বামীর সাথে ওই শহরে থাকতেন।
তার নোবেল পদক প্রত্যাহারের দাবিতে অনলাইনে এক পিটিশনে কয়েক লাখ মানুষ সই করেছে। তবে নোবেল কর্তৃপক্ষ সে সম্ভাবনা নাকচ করেছে।
সূত্র : বিবিসি
কেএ/আইআই