ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও বিজয় একাত্তর হলের সহকারী হাউজ টিউটর মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে ক্যান্টিনে খেয়ে টাকা না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত দুই বছরে তার কাছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা বাকি রয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্যান্টিন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
তবে মাহফুজুল হক মারজান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি তো টাকা পরিশোধ করেছি। আমার কাছে টাকা পায় এমন কোনো বিষয় তো আমার জানা নেই।’ তবে তিনি ক্যান্টিন থেকে খাবার নেন বলে স্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি দার্শনিক মিশেল ফুকোর লেখা চুরির অভিযোগ আসে মারজানের বিরুদ্ধে। শিকাগো জার্নালে প্রকাশিত ফুকোর ওই লেখা থেকে প্রায় ৬২ শতাংশ কপি করে যৌথভাবে একটি প্রবন্ধ মারজান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ঢাকা জার্নালে প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ক্যান্টিন সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে মারজান ক্যান্টিনে খেলেও কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। তিনি প্রায় নিয়মিত পরিবারের জন্য কর্মচারীদের মাধ্যমে ক্যান্টিন থেকে খাবার সংগ্রহ করতেন বলে দাবি ক্যান্টিনের ক্যাশিয়ার ও কর্মচারীদের। তাদের দাবি, টাকা না দেয়ায় এখন আর হিসাবের খাতায় তা সংরক্ষণ করা হয় না।
Advertisement
মারজানের বাকি খাতার কপি জাগো নিউজের হাতে এসেছে। এছাড়া অভিযোগকারীদের জবানবন্দির অডিও রেকর্ডও জাগো নিউজের হাতে আছে।
বাকি খাতায় দেখা যায়, ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত একটি খাতায় মারজানের কাছে ক্যান্টিনের পাওনা ২৬ হাজার ৭০০ টাকা। এরপর ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বাকি ২ হাজার ১৯০ টাকা, একই মাসের ১৭ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪০ টাকা। রাতের খাবার বাবদ কোনো দিন ২৮০ টাকা আবার কোনো দিন ২৫০ টাকা, নাস্তা বাবদ ৫০, ৭৫, ১২০ এই রকম অঙ্ক মিলিয়ে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির ২৩ তারিখ পর্যন্ত হিসাব দাঁড়ায় ৮ হাজার ৪৯২ টাকায়। সে হিসাবে শুধুমাত্র দুটি হিসাবের খাতায় ৩৫ হাজারের মতো উঠানো আছে। এছাড়া হিসাবের বাইরে আরও ৩৫-৪০ হাজার টাকা খেয়েছেন বলে দাবি ক্যান্টিনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
ক্যান্টিনের ক্যাশিয়ার জানান, অনেকবার চেয়েও কোনো টাকা পরিশোধ না করায় মারজানের টাকার আর হিসাব লেখেন না। তার দাবি, গত চার বছরে মারজান তার দোকান থেকে ৭০ হাজার টাকার বেশি ফাও খেয়েছেন।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আজগুবি ছাড়া অন্য কিছু নয়। ক্যান্টিন থেকে এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে করা হয়নি। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আমি আগামীকাল ম্যানেজারকে ডাকব।
Advertisement
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টা তো আমি জানি না। যদি এমন কিছু হয় নিশ্চয় হল প্রাধ্যক্ষ দেখবেন।
এমএইচ/একে/আইআই