আইন-আদালত

প্রধান বিচারপতি গৃহবন্দি নন : অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

Advertisement

মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুবে আলম বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে গত চার-পাঁচদিন কোনো যোগাযোগ নেই।

‘উনি কোথায় আছেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জানি না। আমার জানার কথা নয়। তাছাড়া অসুস্থ হলে যদি অনুমতি না দেন তাহলে তো জোর করে দেখতে যাওয়া যায় না।

Advertisement

‘অনুমতি চেয়েছিলেন কি না’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি চেষ্টাই করিনি। দেশে থাকলে হয়তো চেষ্টা করব।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই উপমহাদেশে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যখন অটাম ভেকেশন (শরৎকালীন অবকাশ) হতো অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের যে ছুটি সে ছুটির পরে আইনজীবীদের সঙ্গে বিশেষ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বার অ্যাসোসিয়েশনের (আইনজীবী সমিতির) সদস্যদের সাথে বিচারপতিরা এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হতেন।

মাহবুবে আলম বলেন, এরই আলোকে অনেকদিন বন্ধের পর নতুন করে কোর্ট শুরু হয়েছে। আমরা আইনজীবীদের নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছিলাম। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়েছিল আমাদের এ মিলনমেলা, চলেছে ১টা পর্যন্ত।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সৌজন্য সাক্ষাৎ শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। তার আগেই আদালত বসেছিলেন। পাঁচজন বিচারপতি বসেছিলেন। কার্যতালিকার মামলা শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Advertisement

তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে সবগুলো কোর্ট নতুন (কজলিস্ট) কার্যতালিকা অনুযায়ী কাজ শুরু করবে। যেসব নতুন মামলা তালিকাভুক্ত হবে তার ভিত্তিতে আপিল বিভাগের কাজ পরিচালিত হবে। এছাড়া আপিল বিভাগে কয়টি বেঞ্চ বসবে সে বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।

চাপ প্রয়োগ করে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে আইনজীবী সমিতির সভাপতির এমন বক্তব্যের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইনজীবী সমিতি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কুক্ষিগত হয়ে পড়ার কারণে এ ধরনের কথা বলে তারা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। একজন বা দুজন বিচারপতির জন্য এদেশের কোনোদিনই বিচার বিভাগের কাজ বন্ধ থাকেনি।

‘আইনজীবী সমিতিকে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপনারা জানেন। এর আগে কাদের মোল্লার পরিবারকে নিয়ে আইনজীবী সমিতিতে (বার এসোসিয়েশনে) মিটিং করেছে। অনেকগুলো যুদ্ধাপরাধের মামলার ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে। এই সমস্ত প্রচেষ্টা হীন প্রচেষ্টা।

প্রধান বিচারপতির হঠাৎ এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেছেন, আমাদের মাননীয় আইনমন্ত্রী বলেছেন, উনি কী কারণ দর্শিয়ে গেছেন। আমরা জানি উনি একজন ক্যান্সারের পেশেন্ট (রোগী)।

আগেও উনার ক্যন্সারের ট্রিটমেন্ট হয়েছে। কাজেই এটা সম্পূর্ণ উনার ব্যক্তিগত ব্যপার। এ সমস্ত বক্তব্য দিয়ে একটি বিশেষ রাজনেতিক দল নানারকম ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এগুলোর কোনো সারবত্তা নেই, কোনো রকম বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। এগুলোকে গোচরে আনারই প্রয়োজন পড়ে না।

অবকাশোত্তর সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে প্রধান বিচারপতির না থাকার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘উনি থাকবেন কেন? উনি তো গতকালই ছুটিতে চলে গেছেন। ছুটিতে চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল রাতেই প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞাকে। তাহলে এক অনুষ্ঠানে কি দুইজন প্রধান বিচারপতি থাকতে পারেন? তাছাড়া এটা সম্পূর্ণ তার ব্যাপার।

অনুমতি চেয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চেষ্টাই করি নাই। দেশে থাকলে হয়ত চেষ্টা করব।

এফএইচ/একে/আইআই