রাজিব আহমেদ বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত বিক্রয় প্রশিক্ষক। ক্যারিয়ারে তিনি সারা দেশে দেড় শতাধিক কর্পোরেট হাউজে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ঘণ্টার বেশি সময় শুধু বিক্রয় পেশার উপরেই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিক্রয় অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বয়ে এনেছেন প্রায় ৩০ হাজার কর্মী। এছাড়া তার বিক্রয় ও আত্মোন্নয়নমূলক প্রায় ৭০টির মতো বইও বাজারে রয়েছে। রয়েছে কয়েকটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় উন্নয়ন বিভাগে দশ বছরেরও বেশি সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা।
Advertisement
সম্প্রতি তার বর্ণিল ক্যারিয়ার নিয়ে কথা হয় জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন নিয়াজ আহমেদ-
জাগো নিউজ : প্রতিবছর মার্কেটিংয়ের ওপর হাজার হাজার ছেলেমেয়ে গ্রাজুয়েশ করনছে, তাদের অনেকেই ফিল্ড জবে যেতে চান না- এ অবস্থায় উন্নয়ন কিভাবে ঘটানো সম্ভব?
রাজিব আহমেদ : চমৎকার এই প্রশ্নটি করার জন্য শুরুতেই আপনাকে ধন্যবাদ। কারণ আপনি সমস্যার গোড়ায় আলোকপাত করেছেন। একটি কোম্পানিতে যত লোক কর্মরত থাকেন, তার বৃহদাংশ মার্কেটিংয়ে। বাকি সব বিভাগ মিলিয়েও মার্কেটিংয়ের সমান লোক হয় না। কারণ এরাই রাজস্ব আয় করে কোম্পানিকে সচল রাখেন। কিন্তু মার্কেটিংয়ের কাজটা কোনভাবেই ডেস্ক জব নয়, পুরোপুরি ফিল্ড জব। ক্রেতা বা গ্রাহক কোম্পানির কাছে আসবে না, যদি মার্কেটিংয়ের লোকজন তাদেরকে খুঁজে বের করে ‘নক’ না করেন। এ জন্য মাঠে নেমে কাজ করতে হবে।
Advertisement
আরও পড়ুন- উপস্থাপনাকেও পেশা হিসেবে নেওয়া যায় : সোনিয়া রিফাত
কোম্পানির হেড অফিসে বড়জোর মার্কেটিংয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অল্পকিছু ডেস্ক জব থাকতে পারে। কেননা তারা ‘স্ট্র্যাটেজিক রোল প্লে’ করেন। মানে ব্যবসায়িক কৌশল তথা নীতি-নির্ধারণী কাজে সম্পৃক্ত। তবে তাদেরকেও মাঠকর্মীদের তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়মিত মাঠে যেতে হয়। মার্কেটিং বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও কিন্তু ফিল্ড জব দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করেন। একপর্যায়ে হয়তো হেড অফিসে থিতু হওয়ার সুযোগ পান। তবে ফিল্ড ভিজিট তাদের করতেই হয়। অর্থাৎ আমি বোঝাতে চাইছি মার্কেটিং জব মানেই প্রকারান্তরে ফিল্ড জব। ডেস্ক জবের পরিমাণ খুবই কম। কিন্তু কর্মজীবনে ঢোকার আগে এই নির্মম সত্যটি অনেকেই উপলব্ধি করেন না বা জানতেও পারেন না।
অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের ‘চান্স পাওয়া ভিত্তিক’ তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশের কোনো সুনির্দিষ্ট স্বপ্ন নেই। তারা জানে না, তারা কী হতে চায়? পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা করা বা ক্যারিয়ার গড়া তো এক প্রকার দুঃস্বপ্ন। ফলে ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে যে বিষয়ে চান্স পাচ্ছে, সেটাকেই ডিগ্রি লাভের কৌশল হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। বলাবাহুল্য, পাঠ্য বিষয় হিসেবে ‘মার্কেটিং’ বরাবরই অগ্রগণ্য। যারা মার্কেটিংয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন, তারা আর কোন বাছ-বিচারে না গিয়ে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন। কারণ তাদের সামনে উদাহরণ হিসেবে কোন না কোন কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তার মুখাবয়ব ভেসে ওঠে, যিনি কি না লক্ষ টাকা বেতন পান। ওই ভদ্রলোক যে কত বছর ফিল্ড জব করে ওই পর্যায়ে পৌঁছেছেন, সেটা কেউ খতিয়ে দেখেন না। তাকে যে এখনও মাসে ১০-১৫ দিন অফিসের বাইরে কাটাতে হয়, সেই খবরও কেউ রাখেন না।
মার্কেটিং বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া তরুণ বা তরুণী মার্কেটিং জবের ধরন ও কাজের ক্ষেত্র সম্পর্কে কোনরূপ সুস্পষ্ট ধারণা ব্যতিরেকেই জিপিএ-র পেছনে ছোটেন। একপর্যায়ে ভালো ফলাফলও করছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত চাকরি আর মিলছে না। কারণ তারা মার্কেটিংয়ে ডেস্ক জব খুঁজছেন। কিছুদিন ঘোরাঘুরি করে, না পেয়ে ভাগ্যকে দুষছেন বা মামা-চাচা নেই বলে আক্ষেপ করছেন। এই সমস্যার সমাধান ততদিন পর্যন্ত সম্ভব নয়; যতদিন পর্যন্ত তরুণ প্রজন্ম জীবনের লক্ষ্যহীনভাবে ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। তারপরও আমি বলতে চাই, মার্কেটিং পেশা মানেই ফিল্ড জব- এ বাস্তবতা যারা মন থেকে মেনে না নিবেন, তাদের মার্কেটিং পড়াই ঠিক নয়। তরুণ প্রজন্মের উচিত- যেকোন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভের জন্য ভর্তি হওয়ার আগেই জেনে নেওয়া যে, ভবিষ্যতে তাদের জন্য কী ধরনের চাকরি অপেক্ষা করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং’ বিভাগ এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।
Advertisement
আরও পড়ুন- ভারতের অডিও ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কাজ করছি : বুশরা
জাগো নিউজ : সেলস প্রফেশনে জব পাওয়ার সম্ভাবনা ও ক্যারিয়ার গ্রোথ কতটুকু? রাজিব আহমেদ : পেশা হিসেবে বিক্রয়কর্ম (সেলস) তো অনন্য, অসাধারণ। বিক্রয় পেশা হতে পারে এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা, সাফল্যের ঝরনাধারা। বর্ণিল এ পেশার রয়েছে নিজস্ব ব্যাকরণ; অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য। এ বিদ্যা আসলে মানুষের মন জয়ের কলাকৌশল। কেউ যদি পেশাটাকে মন থেকে ভালোবাসতে পারেন, তাহলে এর নিগূঢ় রহস্য উন্মোচন করে নিজেই বিস্মিত হবেন। বিক্রয় এত মজার পেশা যে, নিজের বেতনের চেক নিজেই লিখে থাকেন। ক্যারিয়ার গ্রোথ কেউ ঠেকাতে পারে না। খুব দ্রুত পদোন্নতি কেবল বিক্রয় পেশাতেই সম্ভব। ভালো সেলসম্যানের চাহিদা বিশ্বব্যাপী।
জীবনের শুরুতে সেলস জবে ঢুকতে পারলে এবং বছর দুয়েক কাটিয়ে দিতে পারলে জীবনে কখনো ঠেকতে হবে না। যারা মানুষের সঙ্গে মিশতে এবং ঘুরতে পছন্দ করেন, পেশা হিসেবে বিক্রয়কর্ম তাদের জন্য চমৎকার অভিজ্ঞতা। জীবনের প্রথম সেলস জব আপনাকে খুঁজে নিতে হতে পারে, এরপর সারা জীবন চাকরিই আপনাকে খুঁজে নেবে, যদি আপনি সেই মানের ও মাপের সেলসম্যান হন। মার্কেটিং জব বলতে আমরা যা বুঝে থাকি, তার ৯৯% আসলে সেলস জব। যেকোন কোম্পানির সবচেয়ে বেশিসংখ্যক লোক সেলস জব করছেন। তাই এর পেশাগত সম্ভাবনা অসীম। শেষ কথা, পৃথিবীতে মানুষ বাড়ছে, বাড়ছে তাদের চাহিদা ও প্রয়োজন। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভালো মানের বিক্রয়কর্মীর চাহিদা।
জাগো নিউজ : সেলসম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা কোন কোন দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন? রাজিব আহমেদ : যেকোন নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা তার পছন্দ ও রুচিকে প্রাধান্য দেবেন- এটাই বাস্তবতা। তবে সেলসম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিম্নোক্ত গুণাবলী অবশ্যই যাচাই করা হবে।ক. আপনি কতটা হাসিখুশি ও পোশাক-পরিচ্ছদে স্মার্ট? ব্যক্তিত্ব ও রুচিবোধ ফুটিয়ে তুলতে পারেন কি না?খ. কথা-বার্তায় চটপটে স্বভাবের কি না? গুছিয়ে কথা বলতে পারেন কি? বাচনভঙ্গি কেমন?গ. উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা কেমন? সহজে যেকোন মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেন কি না?ঘ. যেকোন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে অতি দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারেন কি না? ঙ. বড় করে স্বপ্ন দেখতে পারেন কি না? পেশাগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে কি না?চ. প্রথম দর্শনেই আত্মবিশ্বাসী মনে হয় কি না? রসবোধ আছে কি না?ছ. দ্রুত শিখে নেওয়ার মানসিকতা আছে কি না?জ. দেশের যেকোন প্রান্তে কাজ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত কি না? ঝ. মানুষকে বোঝানোর বা যুক্তি দাঁড় করানোর ক্ষমতা কেমন?
আরও পড়ুন- কোয়ালিটি থাকলে আমাকে হারাবে কে : আলাভী হুসাইন
জাগো নিউজ : নতুনরা বিক্রয় পেশায় আসার জন্য নিজেকে কিভাবে তৈরি করবে? রাজিব আহমেদ : বিক্রয় তথা মার্কেটিং পেশায় নতুনদের মুক্ত মনে শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। স্নাতক পর্যায়ে যা শিখে এসেছেন, কর্মজীবনের ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ খুব সামান্য, নেই বললেই চলে। আপনাকে শিখতে হবে শিশুর মতো করে নতুনভাবে। সেই শিক্ষা নিতে হবে বসের কাছ থেকে, সহকর্মীর কাছ থেকে, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হবে মার্কেট থেকে। পেশাগত জীবনে যারা আপনার সিনিয়র, তাদের কাজ-কর্ম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিতে কর্মরত বিক্রয় পেশাজীবীর কাছ থেকে শিখতেও কার্পণ্য করবেন না। এসবের পাশাপাশি আর দুটি কাজ আপনাকে পেশাগতভাবে এগিয়ে নেবে-১. বিক্রয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় স্ব-উদ্যোগে নিয়মিত অংশগ্রহণ ২. বিক্রয় পেশা বিষয়ক বইপত্র সংগ্রহে রাখা ও নিয়মিত অধ্যয়ন।
জাগো নিউজ : সেলসম্যানশিপ স্কিল ডেভেলপ করার জন্য কী ধরনের পার্ট টাইম জব সহায়ক হতে পারে? রাজিব আহমেদ : মার্কেটিং বিষয়ে অধ্যয়নকালে যেকোন বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম জব করার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে সেলসম্যানশিপ স্কিল ডেভেলপ করার জন্য অবশ্যই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এখন তো বছরজুড়েই বিভিন্ন মেলা চলে। জানুয়ারি মাসে বাণিজ্য মেলা, ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা, মার্চ মাসে স্বাধীনতা দিবসের মেলা, এপ্রিল মাসে বৈশাখী মেলা... এভাবে চলতেই থাকে। কেউ যদি এসব মেলার বিভিন্ন স্টলে বিক্রয়কর্মীর খণ্ডকালীন কর্ম অভিজ্ঞতা লাভ করেন, তাহলে ভবিষ্যতে চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে। মনের মতো চাকরি খুঁজে পাওয়াটাও সহজ হবে।
জাগো নিউজ : বিক্রয় পেশার আনন্দ ও চ্যালেঞ্জটা কোথায়? রাজিব আহমেদ : আমার দৃষ্টিতে বিক্রয় পেশা পুরোটাই আনন্দের। এত আনন্দ ও সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ আর কোন পেশায় নেই। মনের মাধুরী মিশিয়ে আপনি বিক্রি করতে পারেন। অর্জন করতে পারেন চমৎকার অভিজ্ঞতা। একটা বিক্রি সম্পন্ন করা মানে একটা মাইলফলক ছোঁয়া। এতে আনন্দিত হওয়া ছাড়া আর কী অনুভূতি হতে পারে? ক্রেতার মানসিকতা বুঝে এবং তার প্রয়োজন জেনে নিয়ে ‘খুশি’ করতে পারাটাই বিক্রয় পেশার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যারা পার্ট টাইম জব করেন; তারা আগেভাগেই সেই অভিজ্ঞতাটা সঞ্চয় করেন। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা। সেইসঙ্গে ভিন্ন তাদের পছন্দ, অপছন্দ ও রুচিবোধ। সুতরাং একই পণ্য বা সেবা দিয়ে তাদের প্রত্যেকের মন জয় করাটা সত্যিই কঠিন। কিন্তু সফল বিক্রয় পেশাজীবীরা হাসিমুখে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং শেষ হাসিটা তিনিই হাসেন। একইসঙ্গে ক্রেতাও কিন্তু হাসিমুখে বিদায় নেন। এই যে ‘হ্যাপি এন্ডিং’ বা আনন্দময় সমাপ্তি বিক্রয় ছাড়া আর কোথায় সম্ভব বলুন তো?
জাগো নিউজ : নতুনদের মাঝে আপনি কী কী ভুল খুঁজে পান? রাজিব আহমেদ : মার্কেটিং জবে নতুনদের প্রথমত ধৈর্য ধারণ করতে হবে। পেশাটাকে ভালোভাবে বুঝতে হবে, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে। তবেই তারা সফলতার মুখ দেখবে। কিন্তু নতুন প্রজন্ম খুব ধৈর্যহীন। অল্পতেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। শেখার মানসিকতা কম। দ্রুত লাভের মুখ দেখতে চান; প্রতিদান আশা করেন। কাজে-কর্মে মনোযোগ কম, ফাঁকিবাজি প্রবণতা প্রবল। শর্টকাট খোঁজেন। কাজের প্রতি দরদ নেই, পেশার প্রতি ভালোবাসা নেই, সম্মানবোধ নেই। পেশাগত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে চান না। বই পড়তে চান না। কত কম কষ্টে বেশি অর্জন করা যায়- সেই দিকে বেশি মনোযোগী।
আরও পড়ুন- শেখাটা অনেক বেশি জরুরি : যাযাবর রাসেল
জাগো নিউজ : আমাদের লেখাপড়া ও ফিল্ড জবে যে দূরত্ব আছে তা পূরণ করতে একজন ছাত্রকে কী কী বাড়তি পদক্ষেপ নিতে হবে?রাজিব আহমেদ : আগেই বলেছি- পরীক্ষায় পাসের জন্য মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে যা কিছু পড়ানো হয়, কর্মজীবনে প্রবেশের সময় সেই তত্ত্বীয় জ্ঞানের প্রয়োজন থাকলেও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। এই ‘গ্যাপ’ পূরণ করতে হবে পেশাগত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়ে এবং ব্যবহারিক বিক্রয়বিদ্যার বই পড়ে।
জাগো নিউজ : অনেক সময় অন্যান্য বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্তরাও সেলস প্রফেশনে ঝোঁকেন- সেক্ষেত্রে তাদের প্রিপারেশন কেমন হবে? রাজিব আহমেদ : বাংলাদেশ যেহেতু অধিক জনসংখ্যার দেশ, প্রত্যেক নাগরিকের শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবনের সুসমন্বয় করা সম্ভব নয়। তাছাড়া জীবনের যেকোন পর্যায়ে যে কেউ যেকোন পেশার দিকে ঝুঁকতেই পারেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত জ্ঞান লাভ ছাড়াও সফল হতে পারেন। কিছু পণ্য বা সেবা এতটাই প্রযুক্তিনির্ভর যে, সেখানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে প্রকৌশলীদেরকেই বেশি প্রয়োজন। কারণ পণ্য সম্পর্কিত যথাযথ জ্ঞান না থাকলে বিক্রি করা দুরূহ।
কিন্তু এমন কিছু শিক্ষাগত যোগ্যতার মানুষ বিক্রয় পেশায় আসছেন, যাদের পড়ার বিষয় আর বর্তমান পেশাগত অবস্থান কোনোভাবেই মেলানো যায় না। এসব ক্ষেত্রে সাফল্য লাভের জন্য বিক্রয়কর্মীর পেশাগত দায়বদ্ধতা ও প্রবল ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন। তাঁদেরকে ব্যবহারিক বিক্রয়বিদ্যার বই পড়তে হবে এবং পেশাগত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়াতে হবে। মার্কেটিং জবে সারা জীবনই কমবেশি শিখতে হয়, না হলে পিছিয়ে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন- দক্ষতা অর্জনই বড় কথা : তিশা
জাগো নিউজ : নারীদের বিক্রয় পেশায় সম্ভাবনা কতটুকু? কীভাবে তারা নিজেদের এ পেশায় আনতে পারেন?রাজিব আহমেদ : নারীদের বিক্রয় পেশায় সাফল্য লাভের সম্ভাবনা ছেলেদের চেয়ে বহুগুণ বেশি। কারণ পৃথিবীজুড়ে ছেলে কর্মজীবীর সংখ্যা বেশি, বিধায় ছেলে ক্রেতার সংখ্যাও তুলনামূলক বেশি। এমনকি ক্রয় সিদ্ধান্ত নারীরা নিলেও অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন (অর্থাৎ ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পাদন) ছেলেরাই করে থাকে। আর মানুষ মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে পৃথিবীজুড়ে যেহেতু ছেলে ক্রেতা বেশি, তাই বিক্রয়কর্মী হিসেবে মেয়েদের সম্ভাবনা বেশি। আমি মনে করি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে বিক্রয় পেশায় নারীরাও ভালো করবেন।
এসইউ/এমএস