চীনে মুসলমানদের কাছে থাকা কুরআন শরিফ এবং জায়নামাজ সরকারের কাছে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্যথায় শাস্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলে গণমাধমের খবরে বলা হয়েছে।
Advertisement
একজন নির্বাসিত নেতার বক্তব্য অনুযায়ী, জিনজিয়াং প্রদেশের কর্মকর্তারা সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষজনকে সব রকমের ধর্মীয় জিনিসপত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার হুমকি দেয়া হয়।
ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের নির্বাসিত নেতা দিলসাত রাক্ষিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সম্প্রচারিত রেডিও ফ্রি এশিয়াকে জানান, আমরা একটি সতর্কতা পেয়েছি, যেখানে বলা হয়েছে প্রত্যেক উইঘুর মুসলমানের ঘরে থাকা ধর্মীয় সামগ্রী সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। কুরআন শরিফসহ, নামাজ আদায়ের বিছানা এমনকি ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছু জমা দিতে বলা হয়েছে।
ওই রেডিও চ্যানেলে আরও জানানো হয়েছে, কাজাখ ও কিরগিজ মুসলিমদেরও একই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে চীন। সরকারের এই নির্দেশনা প্রচার করা হয়েছে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাটের মাধ্যমে।
Advertisement
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, চীনে ২০১৬ ও ২০১৭ সালের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী বেইজংয়ের কম্যুনিস্ট সরকার উইঘুর সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। উইঘুরদের সব ধরনের ধর্মীয় উৎসব পালন থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি এই সম্প্রদায়ের লেখকদেরও গ্রেফতার করেছে।
২০০৯ সালে উইঘুর মুসলিমদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে চীনের হান সম্প্রদায়। ওই সহিংসতায় কয়েক শ’ মুসলিম উইঘুর নিহত হন।
বেইজিংয়ের অভিযোগ, ইসলামি চরমপন্থীদের কারণে এলাকাটি সহিংসতাপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, উইঘুরদের দমনের জন্য সহিংসতা চালু রাখাটা চীন সরকারের পলিসি। সন্ত্রাসী থাকার অজুহাতে উইঘুরদের এলাকায় চীনের সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে কয়েক বছরে বহু উইঘুর মুসলমানকে হত্যা করেছে।
উইঘুর সম্পদ্রায়ের দাবি, ১৯৪৯ সাল থেকে তারা চীনের নিপীড়নের শিকার। চীন অবৈধভাবে তাদেরকে একপ্রকার দাস বানিয়ে রেখেছে।
Advertisement
তবে চীনের দাবি, বোমা হামলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে আটকে দেয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে সরকারের কাছে মুসলিমদের ধর্মীয় সামগ্রী জমা দেয়ার নির্দেশকে গুজব আখ্যা দিয়ে তা অস্বীকার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে উইঘুরের পরিবেশ শান্ত থাকারও দাবি করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্র : ইন্ডিপেনডেন্ট
কেএ/আইআই