ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে নতুন ডিন নিয়োগে ‘অধ্যাদেশ লঙ্ঘন হয়েছে’ দাবি করলেও নিজেকে ওই পদে আবারও রাখা হলে ‘১৯৭৩ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ’ লঙ্ঘন হত বলে মনে করেন টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া। শুক্রবার বিকেলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ডিন অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
Advertisement
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অধ্যাদেশ অনুযায়ী অনুষদটির ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়ার ৯০ দিন মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে অনুষদটির ভারপ্রাপ্ত ডিনের দায়িত্ব দেয়। এতে ‘অধ্যাদেশ লঙ্ঘন হয়েছে’ বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যাপক শফিউল।
শফিউল বলেন, ‘এক ভারপ্রাপ্ত ডিনকে সরিয়ে আরেক ভারপ্রাপ্ত ডিন নিয়োগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও প্রচলিত রেওয়াজ পরিপন্থী এবং অধ্যাদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ রেওয়াজ অনুযায়ী পরবর্তী ডিন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত ডিন দায়িত্ব পালন করেন। যা ইতোপূর্বে হয়েছে। কিন্তু আমাকে কেন নির্বাচন না দিয়ে সরিয়ে দেয়া হলো, তাহলে আমি কী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আক্রোশের শিকার?’
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ১৭ (২) নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘যদি কোন অনুষদের নির্বাচিত ডিনের অনুপস্থিতিতে অনধিক ৯০ দিনের জন্য উপাচার্য ভারপ্রাপ্ত ডিন নিয়োগ দেবেন।’ এছাড়াও অধ্যাদেশের ২৪ (এল) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী যেহেতু ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হলে কি হবে তার উল্লেখ নেই, সেহেতু সিন্ডিকেট পরবর্তী করণীয় ঠিক করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখবে। এই ধারা অনুযায়ী সিন্ডিকেটের গৃহীত সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মনে করছেন সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন সদস্য।
Advertisement
‘বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের ১৪ কার্য দিবস চলছে, অন্যদিকে সাবেক উপাচার্য দুই মাসের অধিক সময় পেয়েও নির্বাচন দেননি; এর জন্য আপনি কাকে দায়ী করবেন?’ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবও কৌশলে এড়িয়ে যান অধ্যাপক শফিউল। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয় ১৫ দিন আগে। আর এ নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান উপাচার্যের কাছে যথেষ্ট সময় ছিল না নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার। কারণ তিনি দায়িত্ব নেয়ার মাত্র ১৪ কার্যদিবস শেষ হয়েছে।
এদিকে কিছুদিন আগে সাবেক উপাচার্যকে অনুষদ থেকে রুম বরাদ্দ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ উঠে অধ্যাপক শফিউল আলমের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে অধ্যাপক শফিউলের কাছে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ছিল সাংবাদিকদের। ‘ডিন হিসেবে কোনো বিভাগের অধ্যাপককে রুম বরাদ্দ দিতে পারেন কিনা?’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরও তিনি সংবাদ সম্মেলনে দিতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো শিক্ষকের রুম প্রয়োজন হলে তিনি বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে আবেদন করবেন। চেয়ারম্যান রুম বরাদ্দ দেবেন। কোন অনুষদের ডিন রুম বরাদ্দ দিতে পারেন না।
এমআরএম/আইআই
Advertisement