ড্রেসিং রুমে বসে দু'হাতে মাথা ঢেকে ফেললেন এইডেন মার্করাম। তিনি নিজে যে ভুল করে গিয়েছিলেন, সেই ভুলটা এত মোক্ষম সময়ে আরেকজন করবেন সেটা যেন ভাবতেই পারছিলেন না তিনি। মার্করামের কাছে অবিশ্বাস্যই মনে হচ্ছিল। অভিষেকে তিনি ভুল করে রান আউট হয়েছিলেন ৯৭ রানে। অভিষেকেই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেন তিনি।
Advertisement
একই ভুলটা করলেন ডিন এলগার। এই ভুলটা যেন আরও মারাত্মক। মোস্তাফিজুর রহমানের বাউন্সারে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পুল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল উঠে গেলো মিডউইকেটে। মুুমিনুল হক এই সহজ সুযোগটা ছেড়ে দেয়ার কথা নয়। তালুবন্দী করে ফেললেন। ব্যাক্তিগত ১৯৯ রানে আউট হয়ে গেলেন ডিন এলগার।
এইডেন মার্করামের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নেমে ১৯৬ রানের জুটি গড়েছিলেন। এরপর হাশিম আমলার সঙ্গে গড়েন ২১৫ রানের জুটি। টেম্বা ভাবুমার সঙ্গে গড়লেন ৩৪ রানের জুটি। এরই মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৪০ রানের ইনিংস টপকে গিয়েছিলেন আজ দিনের শুরুতেই। এরপর শুধুই নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা। চলে আসলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে।
কিন্তু নার্ভাস নাইনটিজে (১৯৯) আচ্ছন্ন হয়ে গেলেন ডিন এলগার। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির একেবারে মুখে দাঁড়িয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেললেন। ৩৮৭ বল খেলে যে ভুল করেননি, ৩৮৮তম বলে এসে সেই ভুলটাই করে বসলেন। মোস্তাফিজের বাউন্সারে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেট দিয়ে দিলেন। ৪৪৫ রানে পড়লো দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় উইকেট।
Advertisement
এ রিপোর্ট লেখার সময় দক্ষিণ আফ্রিকার রান ১৩২.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৫৮। ৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন টেম্বা ভাবুমা। নতুন ব্যাটসম্যান ফ্যাফ ডু প্লেসিসের রান ১২।
এর আগে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের একেবারে প্রথম ওভারেই এসেছিল কাংখিত ব্রেক থ্রু। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে এই সিরিজের প্রথম উইকেট পেলেন পেসার শফিউল ইসলাম। ফিরিয়েছিলেন হাশিম আমলাকে।
যখন মনে হচ্ছিল, পচেফস্ট্রমের এই পিচে উইকেপ পাওয়াই সম্ভবত সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বোলাররা কোনো হুমকিই সৃষ্টি করতে পারছেন না প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের সামনে, যখন হাশিম আমলা আর ডিন এলগার মিলে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছিলেন, তখনই যেন টাইগারদের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন শফিউল।
আমলা আর এলগার মিলে গড়েন ২১৫ রানের বিশাল এক জুটি। ২০০ বল মোকাবেলা করে ১৩৭ রান করে আউট হলেন হাশিম আমলা। খেলা চলছিল ১১৮তম ওভারের। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভার। বোলার শফিউল। ওভারের তৃতীয় বল। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যাওয়া বলটিকে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিলেন আমলা। দেখে মনে হচ্ছিল, খুবই খামখেয়ালিপূর্ণ একটি শট।
Advertisement
কিন্তু ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফিল্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যাচটি লুফে নিতে তার আর কোনো কষ্টই করতে হয়নি। আগেরদিন ৯৭ রানে রানআউট হয়েছিলেন এইডেন মার্করাম। উইকেটটি যেহেতু রানআউট, সুতরাং কোনো বোলারের নামে লেখা হচ্ছে না। আমলাই আউট হলেন প্রথম কোনো বোলারের হাতে।
আইএইচএস/আইআই