দেশজুড়ে

কুষ্টিয়ায় ধান উৎপাদনের অনিশ্চয়তায় কয়েক লাখ কৃষক

অপারেটর সংকট দেখিয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান পাম্প স্টেশনটি বন্ধ রাখা হয়েছে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার একযোগে পাম্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ২০ জন অপারেটর একসঙ্গে চাকরি ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে পাম্প স্টেশনটি। পাম্প চালু না থাকায় জিকের প্রধান খালসহ শাখা খালগুলোতে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

এতে আমন ধান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন চার জেলার কয়েক লাখ কৃষক। সময়মতো পানি না পেলে হাজার হাজার একর জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদী সংলঘ্ন এলাকায় অবস্থিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান পাম্প স্টেশন।

Advertisement

গত ২৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই স্টেশনের দায়িত্বে থাকা ২০ জন অস্থায়ী পাম্প অপারেটর মেশিন বন্ধ করে চাকরি ছেড়ে চলে যান। ভরা আমন মৌসুমে একযোগে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ায় জিকে সেচ প্রকল্পের পানির ওপর নির্ভরশীল কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার হাজার হাজার কৃষক ধান আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। আশ্বিনের এ সময়টাতে পানি না পেলে ফলন বিপর্যয়সহ ধানগাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে জানিয়েছেন কৃষকরা।

এ নিয়ে কৃষকরা জানান, এ বছর তারা সেচ বাবদ জিকে প্রকল্পকে আগেভাগেই টাকা পরিশোধ করেছেন। মাঠে যারা ধান আবাদ করছেন, তাদের প্রায় সবাই বর্গাচাষি। এখন যদি আবার টাকা দিয়ে পানি কিনে জমিতে দিতে হয় তাহলে তাদের পথে বসতে হবে।

জিকে অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পাম্প হাউসে স্থায়ী কোনো অপারেটর নেই। প্রতিবছর টেন্ডার দিলে ঠিকাদাররা অপারেটর সরবরাহ করেন। এ বছর মাত্র চার মাসের জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হয়। তিন মাস তারা দায়িত্ব পালন করলেও কোনো অর্থ পাননি। এ কারণে সবাই চাকরি ছেড়ে চলে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ব্যবস্থাপনা ইউনিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জিকের পাম্প হাউসের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা শফিকুর রহমান জানান, গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জন্য স্থায়ী কোনো অপারেটর নিয়োগ দেয়া হয় না দীর্ঘদিন।

Advertisement

ঠিকাদারদের মাধ্যমে দিনহাজিরায় অপারেটর নিয়োগ দেয়া হলেও এ বছর অর্থ বরাদ্দসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। অপারেটররা যখন জানতে পেরেছেন চার মাস পর তাদের চাকরি থাকবে না, টাকা-পয়সা পাওয়ার ব্যাপারেও কোনো নিশ্চয়তা নেই, তখন তারা পাম্প মেশিন বন্ধ করে মঙ্গলবার বিকেলে চলে গেছেন। বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সমস্যা কাটবে না। বিষয়টি ঢাকায় প্রধান প্রকৌশলীসহ অন্যদের জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ে সমস্যা সমাধান হোক সে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আল-মামুন সাগর/এএম/জেআইএম