জাতীয়

এক দশক জন্মদিনে শেখ হাসিনাকে কাছে পান না নেতাকর্মীরা

দীর্ঘ এক দশক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে তাকে কাছে পান না দলটির নেতাকর্মীরা। তবে এতে কোনো আক্ষেপ নেই তাদের। বরং তাদের ভাষায়, প্রিয় নেত্রীকে অন্তরেই ধারণ করেন তারা।

Advertisement

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। তারপর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে কখনোই শেখ হাসিনাকে সাড়ম্বরে জন্মদিন পালন করতে দেখেননি তারা। সাধারণত জন্মদিনে নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে ৬১ তম জন্মদিন কাটাতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে।

Advertisement

সে দিন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মী নেত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু নেত্রীর সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে জন্মদিনে প্রতি বছরই জাতিসংঘের সফরে দেশের বাইরেই থাকতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। সব মিলিয়ে দীর্ঘ এক দশক জন্মদিনে কাছে না থাকলেও নেতাকর্মীদের হৃদয়ে থাকেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘উনার জন্মদিনকে আমরা আমাদের অনুভূতি দিয়ে দেখি। তিনি গণতান্ত্রিক রাজনীতি-সংগ্রামের পথিকৃত। বিরোধীদলে থাকাকালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে গণতন্ত্র উত্তরণের সফল সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এক অবিস্মরণীয় বিশ্বাস। বাংলাদেশে আজকে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বিপন্ন মানবতার জন্য এই জন্মদিবস উদযাপনকে আমরা উৎসর্গ করেছি। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া চাইছি, তিনি যেন দীর্ঘজীবী হোন।’

Advertisement

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নেত্রী যতদূরেই থাকুক, তিনি সবসময় আমাদের হৃদয়ের মাঝে থাকেন। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের চলার সাহস। আমরা সবসময় রাজনৈতিক অঙ্গনে নেত্রীকে অনুসরণ করি।’

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘নেত্রীর মনের মাঝে একটাই ধ্যান সোনার বাংলা বিনির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটা আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি সবসময় এই চিন্তাটাই করেন, এই স্বপ্নটাই দেখেন। এই কাজটাকে তিনি যেদিন সম্পূর্ণরূপে সম্পাদন করতে পারবেন, সেই দিনটাকে তিনি সাড়ম্বরে জন্মদিন হিসেবে পালন করবেন।’

মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া। আর এই নিভৃত পল্লীতেই ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। শেখ লুৎফর রহমান এবং সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি হাসু। শৈশব কৈশোর কেটেছে দাদা-দাদির কোলে-পিঠে। বাবার দেখা পেতেন কদাচিৎ। বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জেল-জুলুম, রাজরোষ ছিল নিত্য সহচর। এ কারণে পুত্র-কন্যারা বাবার সান্নিধ্য পেয়েছে খুবই কম। পাঁচ ভাই-বোন। কনিষ্ঠদের মধ্যে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। আজ ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ৭১তম শুভ জন্মদিন।

একে/আরআইপি