মতামত

আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও

কথায় বলে, ‘আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও’। কিন্তু আমাদের দেশে এক ধরনের মানুষ আছেন যারা আইন মানতে চান না। যার যত ক্ষমতা তার মধ্যে আইন না মানার প্রবণতাও ততবেশি। এ রকই এক প্রবণতা হচ্ছে যানজটের শহরে গাড়ি নিয়ে উল্টো দিক দিয়ে চলা। এরকম ঘটনা অনেকদিন থেকে ঘটলেও এবার বেশকিছু রাঘববোয়াল ধরা পড়েছে পুলিশের জালে। রাজধানীতে উল্টোপথে গাড়ি চালানোয় প্রতিমন্ত্রীসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জরিমানা করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাও রয়েছেন। গত রোববার ঢাকার হেয়ার রোডে বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এই অভিযান চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত । ট্রাফিক আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযান দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এমনটিই আশা করা যাচ্ছে।

Advertisement

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধার সামনে উল্টোপথে গাড়ি চলতে দেখে দাঁড়িয়ে যান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এরপরই পুলিশের উদ্যোগে শুরু হয় উল্টোপথে চলা গাড়ি ও মোটরসাইকেল আটকানো অভিযান। দুই ঘণ্টা ধরে চলা এ অভিযানে মামলা ও জরিমানা করা হয়েছে ৫০টি যানবাহনকে। এর মধ্যে ৪০টিই সরকারি গাড়ি। হেয়ার রোডে ভিআইপি গাড়ি বেশি আসে এবং অনেকে উল্টোপথে গাড়ি চালান। আকস্মিক অভিযানে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের গাড়ি উল্টোপথে আসার কারণে আটকে জরিমানা করা হয়। এ সময় উল্টোপথে আসা সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকের গাড়ি আটকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনটি গাড়িকে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে।

যানজটের নগরে উল্টো পথে গাড়ি চললে তা আরো বিপত্তি বাড়ায়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আইন সবার জন্য সমান। সেক্ষেত্রে যতই বড় পদবিধারী হোন না কেন আইন ভাঙার কোনো সুযোগ নেই। দায়িত্বশীল লোকজনই যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে সেখানে আইন প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তীব্র যানজটের ঢাকা শহরে মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালীদের উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে বিভিন্ন সময় আহ্বান জানিয়ে আসছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/জেআইএম

Advertisement