জাতীয়

অবাক শিল্পমন্ত্রী

দেশীয় ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠান রানার গ্রুপের কারখানা দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। দেশীয় এক উদ্যোক্তার বৃহৎ এ উদ্যোগ দেখে গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ সকল কর্মচারীর ভূঁয়সী প্রশংসা করেন তিনি।সোমবার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় অবস্থিত রানার গ্রুপের মোটরসাইকেল তৈরির কারখানা পরিদর্শনে এসে শিল্পমন্ত্রী এ প্রশংসা করেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় হেলিকপ্টার থেকে নামার পরপরই আষাঢ়ের বৃষ্টি ছুঁয়ে যায় শিল্পমন্ত্রীকে। বৃষ্টির মধ্যেই কারখানার কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে ফুল ছিটিয়ে শুভেছা জানান। ভেজা শরীর নিয়েই কারখানার প্রতিটি শেড ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং বার বার রানার গ্রুপের প্রশংসা করেন তিনি। এসময় তিনি মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।কারখানা পরিদর্শন শেষে তিনি রানারের পেইন্ট শপ উদ্বোধন করেন। এরপর সেখানে এক সভায় অংশ নেন শিল্পমন্ত্রী। সভায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের আমদানি নির্ভশীলতা বাদ দিয়ে রফতানির মানসিকতা তৈরির আহ্বান জানান তিনি।এসময় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন রানার গ্রুপ তার একটি স্পষ্ট উদাহারণ। এ জন্য দেশের ব্যবসায়িদের আমদানি নির্ভরশীলতা বাদ দিতে হবে। কিভাবে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা গড়া তোলা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে উদ্যোক্তাদের। আশা করি আমাদের কারখানা মালিকরা বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদন করে দেশের মুখ উজ্জল করবেন। এতে যত ধরনের সহযোগিতা দরকার সরকার তা দিয়ে যাবে।শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের বিশাল মাকের্ট রয়েছে। নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ দ্রুত দেশ এগিয়ে যাবে।তিনি বলেন, পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে দেশে দ্রুত শিল্পায়নের বিকাশ ঘটবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের দেশ আদর্শ। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। অন্যরা বিনিয়োগে আসতে পারলে আমরা কেন পারবো না, প্রশ্ন রাখেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে অর্থনৈতিক জোন করার ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করি এসব বাস্তবায়ন করা গেলে ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে।রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের হুইপ শহিদুজ্জামান সরকার, স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আমানুল্লাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগে. জে. (অব.) শফিকুজামান। এছাড়া অনুষ্ঠানে রানার গ্রুপের দেশের ৬৪ জেলার ডিলাররা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত রানার অটো মোবাইলস লি. বাংলাদেশের মোটরসাইকেল জগতে একটি জনপ্রিয় নাম। দেশীয় ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদন করে কারখানাটি বর্তমানে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীদের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে।রানার অটো মোবাইলস কারখানায় প্রতিদিন ৫০০টি মোটরসাইকেল তৈরি করা হয়। বর্তমানে কারখানাটিতে ১২টি মডেলের ৫০ সিসি থেকে ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে দেশের মোটরসাইকেলের বাজারে একটি বিরাট জায়গা দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।রানার গ্রুপের এ কারখানায় বর্তমানে দুই হাজার লোক কাজ করছেন। এর মধ্যে শুধু মোটরসাইকেল কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী ও দক্ষ টেকনিশিয়ান রয়েছেন ৪৫০ জন। সারাদেশে ডিলার রয়েছেন ২০০ জন এবং ৪০০টি সেলস সেন্টারের মাধ্যমে এ মোটরসাইকেল বাজারজাত করা হচ্ছে।এমএএস/আরএস/আরআই

Advertisement