মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সহিংসতার ঘটনায় রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের পক্ষে সহমর্মিতা জানিয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে।
Advertisement
রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দা জানানো হলেও মিয়ানমারের ভেতরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে অন্যরকম মনোভাব দেখা গেছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে মিয়ানমারের ভেতরের লোকজনের মনোভাব পুরোপুরি তার বিপরীত।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যেসব কার্টুনিস্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, তারা এখন রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে নানা ধরনের বিদ্রুপাত্নক কার্টুন আঁকছেন।
এর মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি প্রচার হয়েছে ‘কুমিরের কান্না’ নামের একটি কার্টুন। ওই কার্টুনটিতে দেখা গেছে, আহত কিছু প্রানিদের মধ্য থকে একদল কুমিরের ছানা সাঁতার কেটে পশ্চিমা ক্যামেরাম্যানের কাছে গেছে।
Advertisement
সেখানে গিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে একটি কুমির বলছে, ‘আমি মাতৃভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।’ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি ইঙ্গিত করেই এই কার্টুন আঁকা হয়েছে।
মিয়ানমারের একজন প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট ইউ নাইং। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেসব কথা বলছে সেগুলো সত্য নয়।’ ৫৮ বছর বয়সী এই কার্টুনিস্ট জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে শুধু চিন্তার খোরাক জুগিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কার্টুন আঁকি।’
মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা কয়েক দশক ধরে সে দেশের জনসাধারণকে প্রযুক্তি, বিতর্ক এবং মতামত থেকে দুরে রেখেছিল। সে দেশের জনসাধারণ কোন বিষয় নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারত না।
কিন্তু কয়েকবছর আগে মিয়ানমার তাদের জনগণকে কিছুটা উন্মুক্ত হবার সুযোগ দিয়েছে। তাই সামাজিক মাধ্যমেও মিয়ানমারের জনগোষ্ঠী এখন বেশ সক্রিয়। রোহিঙ্গা বিরোধী নানা ধরনের কার্টুন এবং মতামত সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
Advertisement
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে না। সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে গত আগস্ট মাস থেকে প্রায় চার লাখ ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার নির্যাতন-নিপীড়নের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। রাখাইনে শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়েছে বলে দাবি সরকারের।
টিটিএন/জেআইএম