সনাতন ধর্মাম্বলী হিন্দু সম্প্রাদয়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজা হিন্দুদের হলেও জাতী ধর্ম বর্ণ নির্মিশেষ সবাই এ উৎসবে সামিল হয়। পূজা এলে শুধু হিন্দু নয়, মুসলমানসহ প্রায় সব সম্প্রদায়ের বাড়িতে উৎসবের আমেজ বইতে শুরু করে।
Advertisement
২৫ সেপ্টেম্বর থেকে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসবের সমাপ্তি হবে।
দুর্গোৎসবে প্রতিটি বাড়িতে নাড়ু তৈরির ধুম পড়েছে। মন্দিরে আগত অতিথিদের লুচি ও মিষ্টির সঙ্গে নাড়ু দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। নওগাঁয় পূজার সময় মুসলমানদের বাড়িতেও মেয়ে জামাইকে আগ থেকে দাওয়াত করা হয়ে থাকে। মেয়ে-জামাই, নাতী-নাতনীদের আগমনে বাড়িতে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে আসে।
নারিকেল আর গুড় দিয়ে তৈরি নাড়ু। সঙ্গে পূজার বাজার থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন মিষ্টান্ন। থালা বাটিতে মুড়ির সঙ্গে নাড়ু নিয়ে সবার সঙ্গে খাওয়ার মজাই আলাদা।
Advertisement
আর এই পূজা উপলক্ষে নারিকেলে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে নওগাঁয়। শহরের ডাবপট্টিতে ৪ জন পাইকারি নারিকেল বিক্রেতা রয়েছেন। এছাড়া খুচরা বিক্রেতাও আছেন কয়েকজন। তবে পাইকারি বিক্রেতাদের দোকানে ভীড়টা বেশি। এসব নারিকেল বরিশাল ও নোয়াখালি থেকে পূজার বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। পূজার সময় ৮-১০ দিন প্রচুর নারিকেল বিক্রি হয়। ডাবপট্টি থেকে এখন প্রতিদিন ৫-৬ হাজার পিস নারিকেল বিক্রি হচ্ছে।
খোসা ছাড়া নোয়াখালি বড় আকারের প্রতিটি নারিকেল ২০ টাকা, মাঝারি ১৫ টাকা এবং ছোট ১২ টাকা। আর বরিশালের বড় আকারের প্রতিটি নারিকেল ২৪ টাকা এবং ছোট আকারে ১৫টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি নারিকেলের খোসা আলাদা ভাবে বিক্রি হচ্ছে ১-২ টাকায়। এগুলো সোফা ও পোড়ানোর কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
শহরের পার-নওগাঁ মহল্লার কনক মন্ডল বলেন, বাড়িতে নারিকেলের গাছ নাই। পূজার সময় বাড়িতে নাড়ু হলে কেমন একটা খাপছাড়া দেখায়। ছেলে-মেয়ে, আত্মীয় স্বজনদের নাড়ু দিয়েই তো আপ্যায়ন করতে হবে। এজন্য ১৪ পিস মাঝারি আকারের নারিকেলে কিনেছি।
বক্তারপুর গ্রামের জরিনা বিবি। দোকান থেকে বেছে বেছে বড় আকারের ছয়টি নারিকেল কিনেছেন। তিনি বলেন, বাড়িতে ছেলে-মেয়ে আছে। প্রতিবেশীদের নাড়ু দেখে কান্নাকাটি শুরু করেছে। পূজার সময় আমাদের উৎসব শুরু হয়। শুধু নাড়ু না নারিকেল দিয়ে খির ও পায়েস করা হবে।
Advertisement
মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের পাইকারি বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, পূজার মৌসুমে তার নারিকেলে চাহিদা প্রায় সাত হাজার পিস। বাজারে ডাবের দাম বেশি হলেও নারিকেলের দাম অনেকটা কম। প্রতিটি নারিকেল আকার ভেদে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পিস। আর ডাবের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা পিস। পূজার সময় বেশি বিক্রি হলেও বাকি সময় দিনে ১৫০-২০০ পিস নারিকলে বিক্রি হয়।
আব্বাস আলী/এফএ/এমএস