দেশজুড়ে

মাদক আস্তানা থেকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল কারাগারে

 

বরিশাল নগরীর রূপাতলী ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বিশ্রামাগার থেকে ৪৫২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল মো. সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

Advertisement

শনিবার বিকেল ৩টার দিকে তাদের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক শামীম আহম্মেদ তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তারা হলেন- কোতোয়ালি মডেল থানায় কর্মরত পুলিশের রিজার্ভ শাখার কনস্টেবল ও বাকেরগঞ্জের হলতা এলাকার মো. শাহজাহান সিরাজের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২০) এবং একই উপজেলার মহেষপুরের মৃত শাহজাহান মুন্সীর ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম মুন্সী (৩০) ও রামনগর গ্রামের রুস্তুম আলী তালুকদারের ছেলে মো. কামরুল ইসলাম তালুকদার (৩৫)।

বরিশাল মেট্রোকোর্টের জেনারেল রেজিস্ট্রার অফিসার (জিআরও কোতোয়ালি মডেল থানা) এসআই প্রদীপ মিত্র জানান, গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর রূপাতলী ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিশ্রামাগারে অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

Advertisement

সেখান থেকে ৪৫২ পিস ইয়াবাসহ পুলিশ কনস্টেবল মো. সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে কনস্টেবল সাইফুল ও জাহিদুলসহ তিনজনকে আসামি করে একটি এবং শুধু জাহিদুলকে আসামি করে পৃথক আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় শনিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওজোপাডিকো’র ওই বিশ্রামাগারের (রেস্ট হাউজ) একটি কক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মনির মোল্লা মাদক সেবন ও বেচাকেনার আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।

অভিযানের সময় জাহিদুল ইসলাম মনির মোল্লাকেও আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় ৭০০ পিস ইয়াবা। তবে আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন কিংবা স্থানীয়ভাবে ঝামেলা হতে পারে ভেবে মনিরকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেয়া হয়।

আস্তানায় অভিযান ইয়াবা উদ্ধারের খবর নগরীতে ছড়িয়ে পড়লেও পুরো বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অভিযানে নেতৃত্বদানকারী গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দেলোয়ার হোসেন।

Advertisement

এ নিয়ে নগরী এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার ঝড় শুরু হলে গতকাল রাতে পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজনকে ৪৫২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার দেখিয়ে মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। অভিযানে ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হলেও মামলায় জব্দ দেখানো হয়েছে ৪৫২ পিস ইয়াবা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিদুল ইসলাম মনির মোল্লা বলেন, একটি মহল ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। দলে তার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করাই এর উদ্দেশ্য। তবে তিনি ওজোপাডিকো বিশ্রামাগারের একটি কক্ষে মাঝে মধ্যে বিশ্রাম করতেন। অভিযানের সময় তিনি সেখানে ছিলেন না।

মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, অভিযানের সময় মনির মোল্লা নামে সেখানে কেউ ছিল না বা পালিয়েও যায়নি। ইয়াবা গণনার পর ৪৫২ পিস হয়েছে। তাই জব্দ তালিকায় সেই সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

সাইফ আমীন/এএম/আরআইপি