রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এ ধরনের কথা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহৎ দল। এ দলকে বিদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখে সন্ত্রাসী, জঙ্গি বলা- এটার নিন্দার ভাষা আমাদের নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোশাররফ বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের বদলে সেটিকে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রত্যাখ্যান করে দলীয় রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। দেশের জনগণ তাদের এ ধরনের পদক্ষেপ সমর্থন করবে না।
Advertisement
বিএনপিকে 'গণতান্ত্রিক দল’ অভিহিত করে দলটির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বিএনপি শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল। একটি গণতান্ত্রিক মধ্যপন্থী ও নির্বাচনমুখী দল। এই দল পাঁচবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে জনগণের নির্বাচনের মাধ্যমে।
‘রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে, রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার নির্বাচিত হয়েছেন এদেশে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এদেশের মানুষের ভোটের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, এ ধরনের কথা-বার্তা বলে দেশকে আজকে বিভক্ত করে, তারা ২০১৪ সালের মতো ভবিষ্যতেও গায়ের জোরে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজ’ এর উদ্যোগে ‘বিচার বিভাগ, সরকার বাহাস : বাংলাদেশে আইনের শাসনের ভবিষ্যত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা।
Advertisement
খন্দকার মোশাররফ বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আজকে সরকার কূটনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। যখন চীনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে এসেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন বাংলাদেশ-চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আকাশচুম্বি। ভারত থেকে ফিরে এসে বললেন, বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক হিমালয় পরিমাণ উচ্চতায়। আজকে আমরা দেখতে পারছি, রোহিঙ্গা সমস্যা যখন হলো আমরা যখন সংকটে, এই রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে তখন দেখছি আমাদের পাশে না থেকে চীনও মিয়ানমারের পাশে, ভারতও মিয়ানমারের পাশে।
মিয়ানমারে দমন-পীড়ন শুরুর সময়ই বাংলাদেশ সরকার তা বন্ধে কূটনৈতিক ব্যবস্থা নিলে বাংলাদেশে এত রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে পালিয়ে আসতে বাধ্য হত না বলে ভাষ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের।
ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কল্যাণপার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী।
এমএম/জেএইচ/জেআইএম