‘আতপ চালে তো ভাতের ক্ষুধা মেটে না’- এ কারণে ওএমএস’র চাল কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অন্যদিকে চাল বিক্রি না হওয়ায় লোকসানের কথা ভেবে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছেন ডিলাররাও।
Advertisement
বাজার নিয়ন্ত্রণে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি শুরু করেছে সরকার। কিন্তু আতপ চাল বিক্রি করায় ওএমএস’র প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ক্রেতারা। আর আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় লোকসানে মুখে আগ্রহ হারাচ্ছেন ওএমএস’র ডিলাররা।
নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে স্বল্প মূল্যে সরবরাহের লক্ষ্যে ১৭ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে সরকারিভাবে খোলা বাজারে মোটা চাল বিক্রি শুরু হয়। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে ৩০ টাকা কেজি দরে মোটা চাল বিক্রি করা হচ্ছে। আর ১৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আটা। একজন ক্রেতা পাঁচ কেজি করে চাল ও আটা নিতে পারবেন।
সরকার মনে করছে, ওএমএস’র চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় খোলা বাজারে চালের দাম কমে আসবে। কিন্তু সরকারের আমদানি করা চালের বেশিরভাগই আতপ চাল। সেগুলো এখন খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তাই ওএমএস’র শুরুর দিন থেকে ক্রেতাদের এ চাল কেনার প্রতি অনীহা দেখা দিয়েছে।
Advertisement
আর লোকসানের আশঙ্কায় আতপ চাল বিক্রি করতে চাচ্ছেন না ডিলাররাও।
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম দিন ঢাকায় ১০৯ জন ডিলার চাল-আটা সংগ্রহ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তা ৩১ জনে নেমে আসে। কারণ জানতে চাইলে ডিলাররা জানান, খাদ্যাভ্যাসের কারণে আতপ চালের প্রতি মানুষের অনীহা রয়েছে। কারণ এ দেশের মানুষ আতপ চালের ভাত খায় না, তারা সেদ্ধ চালের ভাত খায়। কিন্তু সরকারের বরাদ্দ আতপ চাল।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ওএমএসের ট্রাকে চাল বিক্রি করছিলেন সাইফুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর চাল কিনেছি। চারদিনেও তা বিক্রি করতে পারিনি। এবার ওএমএসে সরকার আতপ চাল দিয়েছে। কিন্তু ঢাকার মানুষ আতপ চাল খায় না। তাই বেচাবিক্রিও কম।
‘অন্য সময় ওএমএসের চাল প্রতিদিন যেখানে ২৫ থেকে ৩০ বস্তা বিক্রি করতাম এখন চারদিনেও আট বস্তা চাল বিক্রি করতে পারিনি। এখনও দেড় বস্তা চাল রয়ে গেছে।’
Advertisement
ওএমএস’র চাল কিনতে আসা ইসমাইল হোসেন জানান, বাজারে চালের দাম ৫৫ টাকা। কম মূল্যে সরকার ট্রাকে চাল বিক্রি করছে শুনে আসলাম। কিন্তু এখানে বিক্রি হচ্ছে আতপ চাল। এ চাল কিনে কী করব? কারণ আতপ চালে তো ভাতের ক্ষুধা মেটে না।
ওএমএস ডিলার নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রথম দিন ১৭টি স্পটে চাল বিক্রির উদ্যোগ নেই। আজ (বৃহস্পতিবার) মাত্র পাঁচটি স্পটে চাল বিক্রি করছি। মানুষ আতপ চাল কিনে না।
লোকসানের কারণে ট্রাকে করে ওএমএস’র চাল বিক্রি করতে পারছি না। প্রতিদিনের খরচও উঠে আসছে না। আতপ চাল বিক্রির যে অবস্থা তাতে আগামীতে ব্যবসাই বন্ধ করে দেয়া লাগতে পারে- যোগ করেন তিনি।
এসআই/এমএআর/আইআই