বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিতে উত্থাপিত ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল-২০১৪’ পরীক্ষা করে এর প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। রোববার রাতে সংসদে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমার দেয়ার তাগিদ দিয়ে স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এর দীর্ঘ প্রস্তাবনার পরিবর্তে ‘যেহেতু নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয়’ বাক্যটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।এ ছাড়া বিলের সংশোধনে উল্লেখ করা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের দফা ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা ২, ৩, ও ৪ প্রতিস্থাপিত হইবে। সংসদে উত্থাপিত বিলের ও বর্তমান ৯৬ অনুচ্ছেদের ১ দফায় বর্ণিত অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে কোন বিচারক ৬৭ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন অপরিবর্তিত রয়েছে।সংসদে উত্থাপিত বিলের দফা (৩) এর শব্দগত পরিবর্তন এনেছে স্থায়ী কমিটি। এই দফায় উল্লেখিত এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের আসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিবেন। এই দফায় সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ‘করিবেন’ শব্দের পরিবর্তে ‘করিতে পারিবেন’ শব্দ দুটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়।চতুর্থ সংশোধনী বাতিল হলে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।
Advertisement