খেলাধুলা

কাভানির সঙ্গে আর খেলতেই চান না নেইমার!

উরুগুয়ের এক সময়ের প্রধান স্ট্রাইকার ছিলেন এডিনসন কাভানি। লুইস সুয়ারেজের উত্থানের পর তার বাজার দর কমতে শুরু করে। প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) থিতু হওয়াতে ক্যারিয়ারটা একরমক বেঁচে যায় তার। যদিও উরুগুয়ের হয়ে অনেক সময় সেরা একাদশেও তাকে রাখতে দ্বিধা করেন দেশটির কোচ।

Advertisement

নেইমার পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর কাভানির জন্যই যেন সাপে বর হয়ে দেখা দিল। মাঝ মাঠ থেকে অনেকগুলো বলের যোগান দিচ্ছিলেন নেইমার। যেগুলো থেকে কাভানি গোলও পাচ্ছিলেন। সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করার দারুণ সুযোগ পেয়ে গেলেন তিনি। একের পর এক গোল করার বল বানিয়ে দেয়ার কাউকে যে এর আগে তিনি কখনও পাননি!

কিন্তু অকৃতজ্ঞ কাভানি কি না নেইমারের সঙ্গে বিরোধ বাধালেন পেনাল্টি কিক করা নিয়ে। এর আগেও এক ম্যাচে দেখা গিয়েছিল, নেইমারের হাত থেকে বল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি পেনাল্টি শট নেয়ার জন্য। লিওঁর বিপক্ষে রোববারের ম্যাচেও একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি। এবারের ঘটনাটিই সবার চোখে পড়েছে। বরং খুবই বাজেভাবে।

এই ঘটনার পর চারদিকে তুমুল সমালোচনা। এরই মধ্যে আবার স্প্যানিশ মিডিয়ার খবর, নেইমার নাকি ক্লাব কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন, তিনি আর কাভানির সঙ্গে খেলতে চান না। তাকে বিক্রিই করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টার। কাভানির সঙ্গে তার খেলাটাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

২২২ মিলিয়ন ইউরোর রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে নেইমার বার্সেলোনার মত ক্লাব ছেড়ে পিএসজিতে এসেছেন ক্লাবের মূল খেলোয়াড় হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই। এখানে যদি তার এই ইচ্ছায় কেউ ব্যাঘাত ঘটায় সেটা মেনে নিতে পারবেন না তিনি। এ কারণেই ইউরোপিয়ান মিডিয়ায় চাউর হয়ে গিয়েছে, নেইমার ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন, যেভাবেই হোক কাভানিকে বিক্রি করে দিতে হবে।

স্প্যানিশ পত্রিকা স্পোর্ট রিপোর্ট প্রকাশ করে লিখেছে, নেইমার কাভানির ব্যাপারে নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে ক্লাবকে। পেনাল্টি নিয়ে বিরোধের পর কাভানির সঙ্গে তার খেলা মোটেও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি ক্লাব কর্মকর্তাদের।

স্পোর্ট রিপোর্ট করেছে, 'এরই মধ্যে ক্লাব প্রেসিডেন্ট নাসের আল খলিফার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন নেইমার। ক্লাব প্রেসিডেন্টকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কাভানির উপস্থিতি তিনি আর কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।' একই সঙ্গে কাভানির ট্রান্সফারের বিষয়েও আলাপ করেন তিনি।

তবে পিএসজি প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। তিনি পুরো বিষয়টি খুব সতর্কতার সঙ্গে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

তবে এ ধরনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কাভানি বলেন, ‘এ সব বানানো কথা। আমি জানি না কেন এ সব বলা হচ্ছে। ফুটবলে এ ধরনের ঘটনা হামেশাই ঘটে। আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। সব ঠিক আছে।’

কাভানি ঘটনা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও পানি কিন্তু অনেক গড়িয়ে গেছে। এসব বিষয় নিয়ে নেইমার নিজে মুখ খোলেননি; কিন্তু মঙ্গলবার খবর ছড়িয়ে পড়ে, ইনস্টাগ্রামে কাভানিকে ‘আনফলো’ করেছেন নেইমার। এভাবে কাভানিকে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরে জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে যে, নেইমারের সঙ্গে উরুগুয়ের তারকার সম্পর্ক মোটেই ঠিক যাচ্ছে না।

ম্যাচের পরে নেইমার-কাভানি ঝামেলা নাকি ড্রেসিংরুম পর্যন্ত গড়ায়। সতীর্থদের হস্তক্ষেপে সেই ঝামেলা থামে। এরপরে কাভানি অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। দু’জনের মধ্যে এই ঝামেলা নিয়ে টুইটার-ফেসবুকে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে নেইমারকে। এখন দেখার বিষয়, পিএসজি এই বিতর্ক কী ভাবে সামলায়।

আইএইচএস/জেআইএম