বিনোদন

আমি মেধাবী নই, পরিশ্রমী নির্মাতা : চয়নিকা চৌধুরী

জনপ্রিয় নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী পরিচালক হিসেবে আজ ১৬ বছরে পদার্পণ করলেন। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে পরিচালনায় আসেন তিনি। এই নির্মাতার দীর্ঘ ১৬ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে সাফল্যের পাল্লাই ভারি। টিভি নাটকে তিনি তৈরি করেছেন নতুন ধারা। শুধু নির্মাণ নয়, অসংখ্য দর্শকনন্দিত নাটকের চিত্রনাট্যকারও তিনি।

Advertisement

ক্যারিয়ারে ১৬ বছর পদার্পণ উপলক্ষে চয়নিকা চৌধুরী গত রোববার রাতে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সেখানে তিনি জানান তার নির্মাণ ভাবনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণে নামার প্রস্তুতির কথা....

জাগো নিউজ : নির্মাতা হিসেবে ১৬ বছরে পদার্পণ করলেন। অভিনন্দন আপনাকেচয়নিকা চৌধুরী : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

জাগো নিউজ: আজকের দিনে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা থাকছে?চয়নিকা চৌধুরী : কিছু টেলিভিশনের প্রোগ্রামে যাব। বিকেলে নিউজ টোয়েন্টিফোরের একটি টক শোতে যাব। ওটা রাতে প্রচার হবে।

Advertisement

১৫ বছর পদার্পণ উপলক্ষে গেল বছর গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে ১৫টি বৃক্ষরোপণ করেছিলাম। এবারও ব্যক্তিগতভাবে আজকের এই দিনটি উদযাপনের পরিকল্পনা ছিল। ভেবেছিল সন্ধ্যায় একটা গেট-টুগেদার পার্টি দেব। কিন্তু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি।

কারণ দেশে বিরাজমান রোহিঙ্গা ইস্যু, বন্যা সমস্যা সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ১৬ বছরের ক্যারিয়ার উদযাপন করব আগামী মাসের যেকোনো একটি দিনে। সেখানে আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানাব।

জাগো নিউজ: আপনার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নির্মাতা হিসেবে সাফল্যের মূলমন্ত্র কী? চয়নিকা চৌধুরী : আমি কখনো আগে বলতে পারিনি আমার নাটক অমুক চ্যানেলে প্রচার হবে। নাটক বানিয়েছি, এরপর চ্যানেলে জমা দিয়েছি। সেখানে পরীক্ষার পর আমার নির্মাণ প্রচার হয়েছে। আমি সবসময় পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। আর আমি মেধাবী নির্মাতা নই। তবে আমি অনেক পরিশ্রমী। এটা আমি সবসময় বলি। ভালোবেসে কাজ করেছি এবং পরিশ্রম আজকে আমাকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে, জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। কিছু মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করেছে, ভালোবেসেছে। বলতে পারেন ভালোবাসা ও পরিশ্রমই আমার সাফল্যের মূলমন্ত্র।

জাগো নিউজ: আপনার এই পথচলায় যেসব মানুষের অবদান রয়েছে......চয়নিকা চৌধুরী : ভালো কাজ কখনো একা হয় না। সবাইকে নিয়ে করতে হয়। দীর্ঘ এ পথচলায় আমার পাশে বেশ কিছু মানুষকে পেয়েছি, যাদের নাম না বললেই নয়। লাইট অ্যান্ড শ্যাডোর মুজিবুর রহমান, জায়েদান রাব্বি। এছাড়া আরও আছে আমার স্বামী অরুণ চৌধুরী, ফরিদুর রেজা সাগর, ইমদাদুল হক মিলন, আবুল হায়াত, মাহফুজ আহমেদ, বিপাশা, শমী,মিমি, ঈশিতা, তমালিকা, অপি, শ্রাবন্তি, শাহেদসহ আরও অনেকেই।

Advertisement

তাদের সাহায্য ছাড়া আমি আজ এতদূর আসতে পারতাম না। ধন্যবাদ জানাচ্ছি সেই সব সাংবাদিক এবং চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে যারা আমার যোগ্যতা থেকেও বেশি প্রচার করেছেন ভালোবাসার জায়গা থেকে। সবার সহযোগিতার কারণেই আমার পথচলাটা সুন্দর হয়েছে।

জাগো নিউজ: পরিবারের সাপোর্ট ছিল কেমন?চয়নিকা চৌধুরী : রবীন্দ্রনাথের একটা কথা আমি সবসময় মনে রাখি- মনরে আজ কহ যে, ভালোমন্দ যাহা হোক সত্যরে লও সহজে। আমার এই পথচলায় আমার পরিবারের ভূমিকা সবার আগে। তারা পাশে না থাকলে আমি এই ১৬ বছর এরকম সফলভাবে পার করতে পারতাম না। আমি যেন এই কাজ করতে করতেই না ফেরার দেশে যেতে পারি। এই আমার প্রার্থনা।

জাগো নিউজ: আপনার নির্দেশিত কাজের সংখ্যা মনে আছে?চয়নিকা চৌধুরী : আমার নির্দেশিত ৩৪৮টি টেলিফিল্ম ও ১৪টি ধারাবাহিক নাটক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হয়েছে। এছাড়া সর্বোচ্চ ১৬১টি নাটকে অপূর্ব এবং ৮১টি নাটকে অভিনয় করেছে তারিন। আমাদের দেশে নারী নির্মাতা হিসেবে এটা কিন্তু একটি রেকর্ড বলা যায়।

জাগো নিউজ: চলচ্চিত্র নির্মাণের ইচ্ছা আছে?চয়নিকা চৌধুরী : অবশ্যই আছে। চলচ্চিত্র নির্মাণ আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। গত বছর চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্বেচ্ছায় কিছু সময় বাড়িয়েছি। আগামী বছর চলচ্চিত্র নির্মাণ করব। বর্তমানে চিত্রনাট্য লিখছেন জুলফিকার রাসেল, মাসুম শাহারিয়ার, রুম্মান রশিদ খান, ফেরদৌস হাসান।

তাদের মধ্য থেকে গল্প নেব। আমি বানাব ভালোবাসার একটি ছবি। যেখানে কমেডি, প্রেম সবই থাকবে। সবাইকে নিয়ে হলে গিয়ে দেখা যাবে এমন একটা ছবি আমি বানাব। ছোটপর্দার নয়, অভিনয় করবেন বড়পর্দার শিল্পীরা। কাস্টিংয়ের ব্যাপারে কথা হয়েছে। আমি মন থেকে বিশ্বাস করি আমার নির্মাণে প্রথম সিনেমাই সুপারডুপার হিট হবে।

এনই/এলএ