মতামত

চালবাজি বন্ধ করুন

চালের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না সরকার। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।এমনকি ওএমএসের চালের দামও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চালের দাম বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। খোদ খাদ্যমন্ত্রী বলছেন সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাহলে এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার দায়িত্ব কার? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করছেটা কি?

Advertisement

চালের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, দেশে চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে চালের মজুত রয়েছে। দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। অবৈধ মজুতদার, আড়তদার, মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী মজুতদার, আড়তদার এবং মিল মালিকসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখনই ভালো হয়ে যান, সময় আছে। আপনারা যেভাবে চালের দাম বাড়াচ্ছেন, সিন্ডিকেট করে দেশে চালবাজি শুরু করেছেন, চাল নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন, একটা বিভ্রাট সৃষ্টির চেষ্টা করছেন তা কোনো অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না। চাল নিয়ে সংকট সৃষ্টি ও সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়ে যাবে। এটা হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর মিল মালিক, আমদানিকারক ও চাল ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সাথে বৈঠক রয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে। খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। এদিকে বেড়েছে ওএমএসর চালের দামও। দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে গতকাল থেকে ওএমএসের মাধ্যমে চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে। ওএমএসে আগে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হতো। দাম বাড়িয়ে এবার দ্বিগুণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি ৩০ টাকা করে বিক্রি করা হবে। তবে খোলা বাজারে ১৭ টাকা কেজিতে আটা বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া আগামী বুধবার থেকে হতদরিদ্রদের জন্য 'খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি' শুরু হবে। এখানে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হবে। ওএমএসের চালের দামও যদি বাড়ে তাহলে মানুষজন যাবে কোথায়?

চালের দাম বৃদ্ধির জন্য যে কারণই থাকুক না কেন তা দূর করতে হবে। যারা চালবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও কিভাবে বাড়ে চালের দাম? নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আর কতদিন চলবে চালের বাজার। অনেক মিল মালিকদের কালো তালিকাভুক্ত করা হল। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি তো হয়নি।

Advertisement

শুধু চাল নয় যে কোনো উসিলায় দ্রব্যমূল্য বাড়ানো একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থায়ও গড়ে উঠেনি। টিসিবিকে সক্রিয় করে বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয় সবসময়। কিন্তু আজো টিসিবিকে সেই মাত্রায় কার্যকর করা যায়নি। অনেকদিন ধরেই চালের বাজার অস্থিতিশীল। চালের দাম বাড়লে তা সীমাহীন দুর্ভোগ সৃষ্টি করে ভুক্তভোগীদের। তাই অবিলম্বে চালের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

এইচআর/জেআইএম