জাতীয়

সু চি’র বিচারের দাবিতে উত্তাল ঢাকা

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ও গণহত্যার জন্য দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে দায়ী করে আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার চেয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠন।

Advertisement

সু চি’র গণহত্যা বন্ধ করার দাবিতে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একাধিক সংগঠন এ দাবি জানায়।

বিক্ষোভে নাগরিক পরিষদ ও ভূমিহীন আন্দোলনের নেতারা বলেন, চলমান সংকটে চীন-ভারতসহ সকল প্রতিবেশী দেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে হবে। এ ছাড়াও গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও সু চির আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে।

বক্তারা আরও দাবি করেন, জাতিসংঘের এখনই আরাকান (রাখাইন) রাজ্যকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এবং রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দিতে হবে। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক দান-অনুদান বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগিয়ে শরণার্থী রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে হবে।

Advertisement

প্রেসক্লাবে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ গারো সমঅধিকার সংস্থার (গেরাব) নেতারা বলেন, রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন এখনই বন্ধ করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী চালক সংগ্রাম দলের এক সমাবেশে জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলেনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনার পর জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ তার প্রতিবাদ করলেও মিয়ানমার সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। মিয়ানমারের চলমান সহিংসতা মধ্যযুগীয় বর্বরতা হার মানিয়েছে। এর দায়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা অং সান সুচির শাস্তি হওয়া উচিৎ।’

এ দিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে হেফাজতে ইসলামের এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অং সান সুচির কুশপুত্তলিকা দাহ করেন সংগঠনের কর্মীরা।

জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে মিয়ানমারের পণ্য বর্জন করতে হবে। এ ছাড়াও ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার ঢাকায় অবস্থিত মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের ঘোঘণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

Advertisement

গেল ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা জঙ্গিরা রাখাইনে কয়েকটি পুলিশ চেক পোস্টে হামলা চালায়। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হন।

এরপরই নৃশংশ অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ওই অভিযান শুরুর পর জীবন বাঁচাতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে অভিযান শুরুর পর অন্তত ৩ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে।

রাখাইনে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি থাকায় নির্মম এ নির্যাতনের খবর মূলত পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে। পালিয়ে আসা এ রোহিঙ্গারা বলছেন, সেখানে তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এআর/এএস/এনএফ/এমএস