আন্তর্জাতিক

‘মুসলিমদের দেশছাড়া করানোর চেষ্টায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী’

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে এমন অনেক প্রমাণ আছে বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। স্যাটেলাইট থেকে তোলা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের অনেক ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেষ্টি বলছে, সেখানে গত তিন সপ্তাহে আশিটিরও বেশি স্থানে বিশাল এলাকা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। খবর বিবিসি।

Advertisement

মুসলিমদের দেশছাড়া করানোর চেষ্টায় রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে সেনাবাহিনীর দাবি তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বেসামরিক নাগরিকদের অত্যাচারের কথা সরাসরি অস্বীকার করছে সেনারা। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম।

মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৩০ ভাগ রোহিঙ্গা গ্রামই এখন জনমানবশূণ্য। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশের নাগরিক বলে পরিচয় দেয় না মিয়ানমার। দেশটি রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে পরিচয় দেয়।

সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে বিভিন্ন দেশ।

Advertisement

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের সহযোগী স্থানীয় গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়েছে বলে অ্যামনেষ্টির এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি, স্যাটেলাইটে আগুন সনাক্ত করতে পারে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং ঐ অঞ্চল থেকে পাওয়া ছবি ও মানুষের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, যে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে মোট ৮০টি জায়গায় ব্যাপক মাত্রায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এমন সংঘবদ্ধ দলগুলো এক সঙ্গে মিলে এই জ্বালাও পোড়াও চালাচ্ছে।

তারা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। অ্যামনেস্টির কর্মকর্তা তারানা হাসানের ভাষায়, এটা পরিষ্কার যে সুপরিকল্পিতভাবে এসব সহিংসতা চালানো হচ্ছে।

Advertisement

প্রমাণ হিসেবে অ্যামনেস্টি বলছে, যেসব জায়গায় আগুন দেয়া হয়েছে সেই জায়গাগুলোর আগের চার বছরের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তারা কোন অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেখতে পাননি। বেছে বেছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতেই আগুন দেয়া হয়েছে।

যেসব গ্রামে রোহিঙ্গা এবং রাখাইনরা পাশাপাশি বাস করে, সেখানে রাখাইন বাড়িগুলো আগুনের হাত থেকে বেঁচে গেছে বলে অ্যামনেস্টি এই রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।

টিটিএন/এমএস