আন্তর্জাতিক

স্কুলে মায়েদের ক্লাস নিচ্ছেন সন্তানরা

খুদে শিক্ষার্থীরাই এখন শিক্ষক। আর তাদের অধীনে বর্ণপরিচয় শিখছেন তাদের মায়েরা। এ দৃশ্য কলকাতার নদিয়া-মুর্শিদাবাদ জেলার। মুর্শিদাবাদের লালবাগের কুতুবপুর প্রাথমিক স্কুলে ৮ সেপ্টেম্বর, সাক্ষরতা দিবস থেকে শুরু হয় এই কার্যক্রম। সপ্তাহে চার দিন স্কুল ছুটির পর বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ক্লাস।

Advertisement

এখনও মাঠে না নামলেও প্রায় একই রকম পরিকল্পনা নাকাশিপাড়ার ধর্মদা প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের। ওই স্কুলে প্রায় সাড়ে চারশ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ শিক্ষার্থীর মা নিরক্ষর।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাসচন্দ্র দাস বলেন, শিগগিরই ওই নিরক্ষর মায়েদের নিয়ে স্কুলে বিশেষ ক্লাস শুরু হবে।

লালবাগের নাগিনাবাগের আয়েশা বিবি কুতুবপুরের স্কুলে এসেছেন তার ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল শেখের কাছে পড়তে। তিনি বলেন, আমি তো লেখাপড়া জানি না। স্কুল থেকে পড়াবে তাই এসেছি। ছেলের কাছে শিখতে পেরে ভালও লাগছে।

Advertisement

আস্তাবল কলোনির বিবিজানও স্কুলে এসেছেন তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া তার মেয়ে জ্যোৎস্নার কাছে অ-আ লিখতে। তিনি বলেন, ব্যাংকে বা অন্য কোথাও যখন স্বাক্ষর করতে বলে, টিপসই দিতে লজ্জা লাগে। এবার স্বাক্ষর শিখছি। আর টিপসই নয়।

শুধু তো অন্যত্র নয়, স্কুলের বই বা পোশাক নেয়া, এমনকি অভিভাবক বৈঠকে স্বাক্ষর করতে হয় বাবা-মাকে। প্রতিবারই দেখা যায়, কিছু অভিভাবক টিপসই দিচ্ছেন। আর তা দেখেই তাদের সাক্ষর করার কথা ভাবতে শুরু করে কুতুবপুর প্রাথমিক স্কুল।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহমুদল হাসান বলেন, স্বাক্ষর করতে জানা, দৈনন্দিন জীবনে ছোট-ছোট অংকের হিসাব করতে জানা এবং ছোট বাক্য লিখতে-পড়তে জানা- এই তিনটি বিষয় শেখানোর চেষ্টা করছি আমরা।

শুধু নারীদের কেন? প্রধান শিক্ষক জানান, পর্যায়ক্রমে পুরুষদেরও সাক্ষর করতে শেখাবেন তারা।

Advertisement

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি দেবাশিস বৈশ্য বলেন, ওই স্কুল ভাল কাজ করছে। অন্য স্কুলও এগিয়ে এলে এলাকার ছবিটাই পাল্টে যাবে।

এআরএস/আরআইপি