মতামত

চালের দাম কমছে না কেন?

চালের দাম বেড়েই চলেছে। বলা যায় এই মূল্যবৃদ্ধি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটা। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভোক্তাস্বার্থ বলে যদি কিছু থাকতো তাহলে এই অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের এমনিতেই কোনো ছলের অভাব হয় না। এবার হাওর অঞ্চলের দুর্যোগ, দেশেজুড়ে বন্যাকে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। সরকার বলছে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

Advertisement

যথেষ্ট মজুত আছে। এরপরও দাম বাড়ছে। তাই চলের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। গত এক মাসে সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা, মাঝারি ও মোটা চালের দাম ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। বাজারে সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকার ওপরে উঠেছে, যা বছরের এ সময়ে সাধারণত ৫০ টাকার নিচে থাকে। অন্যদিকে মাঝারি মানের চালের মধ্যে বিআর-২৮ প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা এবং মোটা চাল মানভেদে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৬ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে ৩ লাখ ৬৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। চালের সংকট মোকাবিলায় ঈদের আগে সরকার দুই দফায় আমদানির শুল্ক কমিয়ে ২৮ থেকে ২ শতাংশে নিয়ে এসেছে। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য বাকিতে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর প্রভাব চালের বাজারে পড়ার কথা। কিন্তু ইতিবাচক কোনো প্রভাব দেশের চালের বাজারে দেখা যাচ্ছে না। সরকার চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে দায়ী করছে। বাজারে চালের অভাব নেই, যথেষ্ট মজুত আছে।

এ ছাড়া চালের আমদানি খরচ মাত্র ২৪-২৫ টাকা। এরপরও চালের দাম বাড়ছে। এ অবস্থায় চালের বাজারে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসকদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শুধু চাল নয় যে কোনো উসিলায় দ্রব্যমূল্য বাড়ানো একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থায়ও গড়ে উঠেনি। টিসিবিকে সক্রিয় করে বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয় সবসময়। কিন্তু আজো টিসিবিকে সেই মাত্রায় কার্যকর করা যায়নি। অনেকদিন ধরেই চালের বাজার অস্থিতিশীল। চালের দাম বাড়লে তা সীমাহীন দুর্ভোগ সৃষ্টি করে ভুক্তভোগীদের। তাই অবিলম্বে চালের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় যে কোনো মূল্যে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।

এইচআর/আরআইপি