দেশজুড়ে

চলছে পূজার প্রস্তুতি

‘দেবী এবার আসবেন নৌকায় চড়ে এবং যাবেন ঘোড়ায় চড়ে’ এমন প্রত্যাশায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রাজবাড়ীর পাঁচ উপজেলার ৪১১টি মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

Advertisement

তবে এবার জেলার সবচেয়ে বড় পূজা মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া জামালপুর গ্রামের আলোকদিয়া গ্রামে। যেখানে পুকুর ও মাটির উপরে কয়েকটি স্তরের ৫টি মঞ্চে ২০০ দেব-দেবী প্রদর্শনের জোর প্রস্তুতি চলছে। আয়োজক কমিটি ব্যতিক্রমী পূজা উদযাপনে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে।

আয়োজক কমিটির দাবি এটি দেশের মধ্যে একটি ব্যতিক্রমী পূজা মণ্ডপ যার প্রতি বছরই কিছু না কিছু নতুনত্ব থাকে, এবারও রয়েছে। এ মণ্ডপটি দর্শনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন।

বাঁশের তৈরি ৪০ ফুট উঁচু, ১০০ ফুট লম্বা ও ৬০ ফুট চওড়া ৫টি স্টেজে বিভিন্ন স্তরের ২০০ দেব-দেবী প্রদর্শন করা হবে। ৭ থেকে ৮ জন কারিগর প্রায় ৩ মাস ধরে দেব-দেবীর প্রতীমা তৈরি ও ১০ থেকে ১২ জন কাঠ-বাঁশের মিস্ত্রি ২ মাস ধরে মঞ্চ তৈরির কাজ করছেন।

Advertisement

এবারের আয়োজনে থাকছে রাধা যশরথের বাসভবন, শ্রী কৃষ্ণের পৌরাণিক কাহিনী, শিব পুরানের কাহিনী, পাতালপুরী মহিরাব বদ কাহিনী, কুরু ক্ষেত্রের যুদ্ধ, এক পদ্মে বোম্বা বিষ্ণু-শিব, বিভিন্ন পানির ফোয়ারা ও মাছের প্রদর্শনী, শ্রী কৃষ্ণের রাস লিলা, মহা পর্বতে শিব, মহা সমুদ্রে নারায়ণের কাহিনীসহ বিভিন্ন দেব-দেবী। ভক্ত ও দর্শনার্থীরা রাধা যশরথের বাসভবনের এক প্রান্তে দিয়ে ঢুকে বের হবেন অন্য প্রান্ত দিয়ে।

কারিগরদের নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় মণ্ডপগুলোর দেব-দেবী তৈরি শেষে চলছে রং-তুলির কাজ। দেব-দেবীর রঙের কাজ শেষে পোশাক-আশাক ও অলংকার প্রদানের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এরপর চলবে মণ্ডপে আলোকসজ্জার কাজ। তাছাড়া নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও থাকবে নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী।

জানা গেছে, জেলার মোট ৪১১টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৯৯টি, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৪৬টি, পাংশা উপজেলায় ৯১টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় ২২টি এবং কালুখালী উপজেলায় ৫৩টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতীমা তৈরির কারিগর দীপক কুমার পাল ও বিলাস পাল জানান, নলিয়া জামালপুর গ্রামে ৩ মাস ধরে ৭/৮ জন কারিগর প্রতীমা তৈরির কাজ করেছেন। মাটির কাজ শেষ করে এখন রঙের কাজ করছে এবং রঙের কাজ শেষে অলংকার ও পোশাক দিয়ে সাজাবেন দেব-দেবী। সব কাজ শেষে দেব-দেবীকে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হবে মঞ্চে।

Advertisement

জামালপুর দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জামালপুরের আলোকদিয়ায় সার্বজনীন পূজা উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। গত বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার বিষয় মাথায় রেখেই এবার স্টেজ উঁচুতে তৈরি না করে নিচু করা হয়েছে। এবার ভিন্ন আঙ্গিকে প্রায় ২০০ মূর্তির প্রদর্শনী হবে।

রাজবাড়ী সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান আসাদ (ক্রাইম) জানান, পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় পূজায় প্রতিটি মণ্ডপে বিপুল সংখ্যক নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যসহ সাদা পোশাকধারী পুলিশ এবং আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নের্তৃত্বে থাকবে বেশ কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

রুবেলুর রহমান/এফএ/আরআইপি