টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্টে নাফ নদীতে আবারও রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবেছে। বুধবার ভোররাতে এ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘেটে। এর আগে মঙ্গলবারও নৌকা ডুবেছে। দুদিনে এ নৌকাডুবির ঘটনায় সাবরাং-এর নাজিরপাড়া ও নয়াপাড়া থেকে তিনজন এবং শাহপরীর দ্বীপ থেকে আটজন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশু রয়েছে। দুই নৌকা থেকে জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হয়েছে মাত্র ১৪ জন। উভয় নৌকার আরও ৪৫ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে। নিহতদের মরদেহের সঙ্গে থাকা নয় ভরি এক আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, দুই লাখ দুই হাজার মিয়ানমার মুদ্রা (কিয়াট) পাওয়া গেছে।
Advertisement
বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে নাফ নদে ফের এই নৌকা ডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন খান। তিনি বলেন, এ নিয়ে পরপর দুরাতে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনায় মোট ১১ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হলো। এসময় তাদের কাছে থাকা নয় ভরি এক আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, দুই লাখ দুই হাজার মিয়ানমার মুদ্রা (কিয়াট) পাওয়া যায়। মরদেহ দাফন করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকার ও মুদ্রা থানা হেফাজতে রয়েছে।
শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে ২৫ জন রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশু ছিল। এদের মধ্যে মাত্র সাতজন জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হয়েছে।
অপরদিকে বুধবার ভোররাতে সাবরাং নয়াপাড়ার পূর্ব দিকে নাফ নদীতে ৪৫ জন রোহিঙ্গা বোঝাই ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ নৌকা থেকে সাতজন জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হলেও ৩৮ জন নিখোঁজ রয়েছে। শাহপরীর দ্বীপে নৌকা ডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আরেফা বেগম বলেন, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ২৫ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে মঙ্গলবার রাতে শাহপরীর দ্বীপের অদূরে নাফ নদীতে নৌকা ডুবে যায়। এতে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে।
Advertisement
বেঁচে যাওয়া আরেক নারী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, নৌকা ডুবিতে তার দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলের মরদেহ পাওয়া গেছে। অন্যজন নিখোঁজ রয়েছে।
নৌকা ডুবির খবর পেয়ে সাবরাং মগপাড়ায় ছুটে যান নিখোঁজ দুই রোহিঙ্গা যুবককের মামা মংডু পেরাংপুর এলাকার মুহাম্মদ উমর। তিনি বলেন, সোমবার রাতে মিয়ানমারের মংডু মংনি পাড়া ঘাটে বাংলাদেশ থেকে একটি নৌকা তাদের আনতে যায়। এতে আমার দুই ভাগিনা মংডু হারিপাড়া এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে মো. আয়াজ ও মো. খালেদ এবং একই এলাকার নজু মিয়ার ছেলে নুর কালাম ডুবে যাওয়া নৌকাতে ছিল। কিন্তু সারাদিন তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সায়ীদ আলমগীর/জেডএ
Advertisement