খেলাধুলা

মেসির জোড়া গোলে বার্সার মধুর প্রতিশোধ

অবশেষে জিয়ানলুইজি বুফনকে হারাতে পারলেন লিওনেল মেসি। গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে দুই লেগে যেভাবে জুভেন্তাস এবং বুফনের কাছে হেরেছেন মেসি, তাতে ইতালিয়ান এই গোলরক্ষককে মনে হচ্ছিল মেসির সামনে অপরাজেয়। শেষ পর্যন্ত সেই কিংবদন্তি গোলরক্ষক বুফনকে পরাস্ত করলেন বার্সার আর্জেন্টাইন তারকা। তাও একবার নয়, দু’বার। মেসির জোড়া গোল আর এক অ্যাসিস্ট, নিজেদের মাঠে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই জুভেন্তাসকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। অপর গোলটি করেছেন ইভান র্যাকিটিক।

Advertisement

মেসি যেন রয়েছেন তার সর্বোচ্চ ফর্মে। এর আগে সপ্তাহের শুরুতেই ঘরের মাঠে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন মেসি। ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষেও। আশ-পাশে কে আছে না আছে সেটা যেন চিন্তা নেই। মেসি যেন মেসিই। তিনি যতক্ষণ ফর্মে থাকবেন, ততক্ষণ অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই আর দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে না। সেটা আবারও প্রমাণ হলো জুভেন্তাসের ক্ষেত্রে।

এর আগে আর কখনও জিয়ান লুইজি বুফনকে পরাস্ত করতে পারেননি মেসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের ১২ বছরের ক্যারিয়ারে এর আগে দুই কোয়ার্টার ফাইনাল, এমনকি ২০১৫ ফাইনালেও বুফনের বিপক্ষে গোল করতে পারেননি মেসি। ২০১৫ ফাইনালে জুভেন্তাসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স হয়েছিল বার্সেলোনা। সেবার গোল করেছিলেন ইভান র্যাকিটিক, লুইস সুয়ারেজ এবং নেইমার। মেসি গোল করতে পারেননি।

অবশেষে এবার বুফনকে হারাতে পারলেন বিশ্বসেরা এই ফুটবলার। খেলার দুই অর্ধেই গোল করলেন মেসি। বাকি গোলটিও তিনি করালেন র্যাকিটিককে দিয়ে। খেলার ৪৫ মিনিটে প্রথম গোলটি এসেছে নেইমারহীন ফরোয়ার্ড লাইন থেকে। ডান পাশ থেকে ওসমান ডেমবেলে বল নিয়ে এগিয়ে এসে সেটা বাড়িয়ে দেন মেসিকে। মেসি সেই বল প্রথমে দেন সুয়ারেজকে। এরপর সুয়ারেজ আবার মেসিকে দেয়ার পর চলতি বলেই বাম পায়ের মাটি কামড়ানো কোনাকুনি শট নেন তিনি। সেটিই গিয়ে জড়িয়ে যায় জুভেন্তাসের জালে। বুফন শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন বল জড়িয়ের যাওয়ার দৃশ্যটা।

Advertisement

খেলার ৫৬তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন ইভান র্যাকিটিক। ডান পাশ থেকে কয়েকজনকে কাটিয়ে এনে সেন্টার পোস্ট বরাবর শট নেন মেসি। সেটিকে ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন জুভেন্তাসের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু বল চলে যায় র্যাকিটিকের পায়ে। ডান পায়ের আলতো শটে সেটি জালে জড়িয়ে দিতে কোনোই কষ্ট করতে হয়নি র্যাকিটিককে।

তার আগেই ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন মেসি। তার বাম পায়ের দুর্দান্ত এক শট সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরে আসার মুহূর্তে বুফকের গায়ে লেগেও বল জড়াতে পারতো নেটে। কিন্তু হালকার ওপর দিয়ে তখন বেঁচে যায় জুভরা।

খেলার ৬৯ মিনিটে ব্যবধান তিনগুণ করেন মেসি। এটি নিজের জোড়া গোলও বটে। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পাশ থেকে তিনজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে এসেই কোনাকুনি শট নেন মেসি। বুফন বুঝতেই পারলেন না কোন পাশ থেকে কোন দিকে শটটা আসতে পারে। আবারও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন শুধু মেসির শট নেয়ার দৃশ্যটা।

জুভেন্তাসও যে কয়েকবার বার্সা গোলরক্ষক টার স্টেগানের পরীক্ষা নেয়নি তা নয়, তবে এসব আক্রমণ থেকে বেঁচে গিয়েছে বার্সা এবং শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা।

Advertisement

আইএইচএস/আইআই