মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিধনযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সু চির সরকারের অধীনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও জাতিগত নিধনের ঘটনায় তাকে নিষ্ঠুর নারী হিসেবেও বর্ণনা করেন আয়াতুল্লাহ আল খোমেনি।
Advertisement
আয়াতুল্লাহ আল খোমেনি বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা মিয়ানমারের জন্য রাজনৈতিক দুর্যোগ। কারণ, এই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করছেন শান্তিতে নোবল জয়ী নেত্রী অং সান সু চির সরকার। যাকে তিনি নৃশংস নারী হিসেবে অভিহিত করছেন।
সহিংসতা বন্ধে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে বাস্তবে পদক্ষেপ নেয়ারও আহ্বান জানান ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর উচিত মিয়ানমারের সরকারের ওপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিকভাবে চাপ বাড়িয়ে দেয়া।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার অযুহাতে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর তাণ্ডব এবং নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ফলে তিন লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে সর্বস্ব ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
Advertisement
মিয়ানমার সরকার সপ্তাহখানেক আগে জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চারশ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। তাদের অধিকাংশকেই বিদ্রোহী হিসেবে উল্লেখ করেছে মিয়ানমার। তবে পরবর্তী সময়ে নিহতদের ব্যাপারে দেশটির পক্ষ থেকে আর কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দাবি, বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসার সময় রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে চলে আসছে। তবে ১৮ জন সাংবাদিকের একটি দলকে সেদেশে শর্ত সাপেক্ষে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢুকতে দিয়েছিল মিয়ানমার।
বিবিসির জোনাথন সেই দলে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই ঘরবাড়িতে মুসলমানরা আগুন দিয়েছে বলে দাবি করা হলেও, ভিডিওতে আগুন দিতে দেখতে পাওয়া লোকজন অাসলে হিন্দু। ভিডিওটা যে ভুয়া সেটা নিশ্চিত হয়ে বিবিসিতে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেন তিনি।
তাছাড়া ১৮ জন সাংবাদিকের ওই দলের সামনেই মিয়ানমারের একটি গ্রামে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। মুসলমানদের বাড়িতে আগুন দেয়ার পর বৌদ্ধ ধর্মের ওই অনুসারীরা লুটপাট করে নিয়ে গেছেন।
Advertisement
এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
আগামীকাল বুধবার ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান রাখাইন প্রদেশের সহিংসতার ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে সতর্ক করার পরই জরুরি বৈঠক ডাকল সংস্থাটি।
সূত্র : স্টারট্রিবিউন
কেএ/টিটিএন/আইআই