রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর অভিযানে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ভূমিকার সমালোচনা করে মার্কিন কলামিস্ট স্টিফেন লেন্ডমেন বলেছেন, ‘সু চি একজন প্রতারক, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের ডার্লিং।’
Advertisement
ইরানের ইংরেজি দৈনিক তেহরান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লেন্ডমেন এ মন্তব্য করেন। মার্কিন এই কলামিস্ট বলেন, ‘মিয়ানমারে যা চলছে তা জঘন্য এবং বিরক্তিকর। ওয়াশিংটন এবং পশ্চিমা বিশ্বের কাছে উপেক্ষিত হচ্ছে। রাখাইনের এই ঘটনাকে আমি ধীরগতির গণহত্যা বলি; যা বছরের পর বছর ধরে চলছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
অং সান সু চি শান্তিতে নোবেলজয়ী, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভোগান্তির শিকার হয়েছেন তিনি। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান বর্বতায় নীরবতা পালন করেছেন। এমনকি সেনাবাহিনীর অভিযান সমর্থন করেছেন। সু চির এই দৃষ্টিভঙ্গিকে কীভাবে দেখছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে লেন্ডমেন বলেন, ‘সু চি হলেন একজন প্রতারক, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের ডার্লিং। তিনি আমাকে মাদার তেরেসার কিছু পন্থা মনে করিয়ে দেন; যা পৌরানিক কাহিনীর চেয়েও বেশি।’
মাদার তেরেসা দারিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতার পরিবর্তে দুঃখভোগের প্রথা-পদ্ধতি উপস্থাপন করেন। তার হাসপাতালগুলো ছিল মানবগুদাম। তিনি ক্ষুধার্ত, পুষ্টিহীনতা ও রোগবালাইকে উপেক্ষা করতেন। বিলাসবহুল জীবন-যাপন করতেন। বিশ্বের ধনী, বিখ্যাত-কুখ্যাতদের সঙ্গে তার দহরম-মহরম সম্পর্ক ছিল।
Advertisement
‘তিনি সাধু-সাধ্বীর চেয়ে বেশি পাপী ছিলেন। একই ধরনের অবস্থা সু চিরও, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য তিনি দায়ী। ’
মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন কমিয়ে আনতে জাতিসংঘ এবং শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর তাদের দায়-দায়িত্ব পালন করছে না কেন? জবাবে লেন্ডমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী নীতির লেজুরবৃত্তি করে জাতিসংঘ। যা নিন্দনীয়। ফিলিস্তিনি এবং অন্যান্য নিপীড়িত মানুষের জন্য জাতিসংঘের বর্তমান এবং সাবেক মহাসচিবরা কী করেছেন- অর্থহীন কথা-বার্তা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি।’
রোহিঙ্গারা যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন, একই ধরনের পরিস্থিতি যদি পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকদের ক্ষেত্রে হতো তাহলে আন্তর্জাতিক সব সংগঠন, প্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিতো। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কেন দ্বৈত-নীতি অবলম্বন করে?
কলামিস্ট স্টিফেন লেন্ডমেন বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের দ্বৈত-নীতি কুখ্যাত এবং অত্যাচারী। দেখুন ইরানকে কীভাবে দেখা হয়। সিরিয়া যুদ্ধে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের সমর্থন করছে। এটাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি হিসেবে বলা হয়। যা ইসরায়েল এবং ওয়াশিংটন চর্চা করে।’
Advertisement
এসআইএস/জেআইএম