‘সাকিবের বিকল্প মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তাইজুল’- জাগো নিউজের পাঠকরা দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগেই ওপরের শিরোনামে একটি প্রতিবেদন দেখেছেন। তা দেখে হয়ত কারো কারো মাথায় গোলমেলে ঠেকেছে। কেউ কেউ হয়ত মেলাতে পারেননি। ভেবেছেন, পারফরমার সাকিব একা বিশ্রাম চেয়ে দলের বাইরে; কিন্তু তার বিকল্প মাহমুদউল্লাহ আর তাইজুল, দু’জন! কিভাবে?
Advertisement
ওই প্রতিবেদনেই ব্যাখ্যা ছিল। প্রথম কথা, সাকিব হলেন সব্যসাচি ক্রিকেটার। ‘টু ইন ওয়ান’। যার পরিচয় শুধুই একজন অলরাউন্ডার নয়। সাকিব একাধারে পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান। আবার স্পেশালিস্ট বোলারও। এক অর্থে দলের এক নম্বর বোলার আর অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ।
ব্যাটিং ও বোলিং দুই ক্ষেত্রেই যার অভাববোধ হয় সমান। তাই তো ২০১৪ সালে নিষেধাজ্ঞার কারনে সাকিব যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে পারেননি, তখন দল সাজাতে গিয়ে সে সময়ের প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, সাকিব হলো ‘টু ইন ওয়ান’। সে নিজে একজন হলেও তাকে রিপ্লেস করতে হলে দু’জন ক্রিকেটারের প্রয়োজন। একজন ব্যাটসম্যান। অন্যজন বোলার বা স্পিনার।
অর্থাৎ সাকিবের বিকল্প খুঁজতে হলে দু’জন পারফরমারকে চিহ্নিত করতে হবে। এ কারণেই ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবের বিকল্প মাহমুদউল্লাহ। আর বোলার হিসেবে তাই তাইজুল।
Advertisement
আজ বিকেলে দল ঘোষণার প্রেস মিটেও উঠলো এ প্রশ্ন। বন্ধু ও পূর্বসুরি ফারুকের মত বর্তমান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও জানিয়ে দিলেন, ‘যেহেতু সাকিব নেই, তাই চিন্তা করেই মাহমুদউল্লাহকে নেয়া হয়েছে। এছাড়া সাকিবের জায়গায় আমরা একজন অতিরিক্ত স্পিনার নিয়েছি। প্রথমে আমাদের পরিকল্পনা ছিল পাঁচ পেসারের সাথে একজন মাত্র স্পেশালিস্ট স্পিনারকে নেয়া হবে। যেহেতু সাকিব যাচ্ছে না, তাই আমরা তাইজুলকে যোগ করেছি।’
তবে হ্যাঁ মাহমুদউল্লাহ বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার হলে আর বোলিংয়ের ধারটা তাইজুলের মত হলে ভিন্ন কথা ছিল; কিন্তু মাহমুদউল্লাহ তো ডানহাতি। ব্যাটসম্যান কাম অফ স্পিনার। তাই তার একার পক্ষে সাকিবের বিকল্প হওয়া কঠিন।
যেহেতু সাকিব বাঁহাতি স্পিনার, তাই তার জায়গায় একজন বাঁহাতি স্পিনার নেয়া ছাড়া উপায় নেই। এছাড়া একমাত্র স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার হবার কারনেও তাইজুলকে বিবেচনায় আনতে বাধ্য হয়েছেন নির্বাচকরা।
হোক তা একদিনের সীমিত ওভারের ফরম্যাটে, তারপরও ফার্স্টও বাউন্সি পিচে মাহমুদউল্লাহর ট্র্যাক রেকর্ড খুব ভাল, তার অন্তর্ভূক্তির এটাও বড় কারণ। ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে একজোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড আছে তার।
Advertisement
ইংল্যান্ডের সাথে ২০১৫ সালের ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ১০৩ আর ওই আসরে হ্যামিল্টনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের সাথে ১২৮ রানের ইনিংস দুুটির পর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে আয়ারল্যান্ডে আবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো শতরান করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
সেটা একদিনের সীমিত ওভারের ফরম্যাটে হলেও তাকে নেয়ার ক্ষেত্রে সেটাও বিবেচনায় এসেছে। তাই তো প্রধান নির্বাচকের মুখে একথা, ‘মাহমুদউল্লাহ বাউন্সি উইকেটে ভাল খেলে। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সে ভাল খেলেছে। আমি তার ভাল খেলার ব্যাপারে যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী। বর্তমানে সে যেভাবে ব্যাটিং করে তাতে তাকে নিয়ে আশাবাদী হওয়াই যায়।’
এআরবি/আইএইচএস/আইআই