রাজনীতি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনীতি করতে চাই না : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ববিবেক যখন জাগ্রত তখন সরকার কোনো প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। আমরা যখন কথা বলতে শুরু করেছি তখন তারা বলতে শুরু করেছে- আমরা নাকি রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনীতি করছি। একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা কোনো রাজনীতি করতে চাই না।’

Advertisement

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দশম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি জাতীয় সমস্যা। এটা নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না। আমরা চাই এ সঙ্কট মোকাবেলা করতে হলে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কারণ এটা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আগ্রাসন। রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে বলছি না। তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়া হোক। পরবর্তীকালে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করা হোক।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যে চুক্তি হয়েছিল সেই চুক্তির মাধ্যমেই মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে হবে। যাতে রোহিঙ্গারা ফিরি গিয়ে মিয়ানমারে নাগরিকত্ব পান।’

Advertisement

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেরিতে হলেও সরকারের কয়েকজন রোহিঙ্গাদের দেখতে যাচ্ছেন। ভালো কথা, আমরা জানি না তারা সেখানে কী করবেন।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে। উদ্দেশ্য একটি জাতিগোষ্ঠীকে নিধন করা। এ বিষয়ে সমগ্র বিশ্ব জাগ্রত হলেও বাংলাদেশের অনির্বাচিত সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে চুপ করে আছে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকার বলছে তারা সন্ত্রাস দমন করছে। আওয়ামী লীগ সরকারও বলছে রোহিঙ্গারা অস্ত্র নিয়ে আসতে পারে। এদের মাধ্যমে জঙ্গি আসতে পারে। একটি কথা স্পষ্ট- মিয়ানমার সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কথা বলার সুর এক। কারণ বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গির কথা বলে রাজনীতিকে ঘোলা করে ফের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’

দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সমগ্র বিশ্বের মানুষ সাহায্য করতে চায়। তাই পার্শ্ববর্তী দেশ কী বলল আর না বলল সেদিকে না তাকিয়ে সরকারের উচিত হবে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে আশ্রয় দেয়া এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া।’

Advertisement

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এতে অারও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপি (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

এমএম/জেডএ/আইআই