রামপুরা থেকে আমুলিয়া সড়কের বনশ্রী অংশটি বনশ্রীবাসীর জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। একইভাবে রামপুরা ডিআইটি রোড থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত সড়কটি রামপুরাবাসীসহ এ সড়কে চলাচলকারী মানুষের জন্য এক নিদারুণ দুঃখের নাম।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট এলাকার ভুক্তভোগীরা বলছেন, এক পশলা বৃষ্টি কিংবা ফাঁকা রাজধানীতেও সেখানে যানজট এখন চেনা দৃশ্য। রামপুরা কিংবা বনশ্রীবাসী জানে না কবে হবে এ দুর্ভোগের সমাধান। বনশ্রী এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সড়কে দুর্ভোগের শুরু দেড় বছর আগে। তবে ছয় মাস ধরে রাস্তা ভেঙে একাকার। এক পশলা বৃষ্টিতেই ডুবে যায় রাস্তার বেশির ভাগ।
রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী-আমুলিয়া সড়কে বৃষ্টির কারণে বেহাল রাস্তার খানাখন্দ ভরে গেছে পানিতে। বোঝার উপায় নেই কোথায় রাস্তা ভালো, কোথায় খারাপ। হেলে-দুলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন। যানজট যেন নিত্যসঙ্গী। দুর্দশাগ্রস্ত রাস্তাই এলাকায় বসবাসকারী মানুষের দুর্ভোগের মূল কারণ- বলেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা।
গতকাল রোববার বিকেল থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত চলা বৃষ্টিতে এ দুর্দশা আরও প্রকট হয়েছে। সোমবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী চাকরিজীবীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। বৃষ্টিতে ডুবে উঁচু নিচু এবড়ো-থেবড়ো রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও যেন উপায় নেই ব্যস্ত মানুষগুলোর।
Advertisement
রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনের ডিআইটি রোডে হেলে-দুলে খুবই ধীরগতিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। যানবাহন কম হলেও ধীরগতির কারণে তা দীর্ঘপথে যানজট তৈরি করেছে। যে কারণে রামপুরা ব্রিজে ওঠার আগে মেরুল বাড্ডায়ও চাপ পড়ে যানবাহনের।
পানি জমে থাকায় সড়কটির কোথায় গর্ত, কোথায় ভাঙা তা বোঝারও উপায় নেই। রাস্তাটির বেশ কটি স্থানে ভেঙে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনাও বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে ডুবে গেছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ড্রেনেজ নির্মাণের জন্য তৈরি গর্তও।
বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলে সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বের হয়েছেন রোহান আজিজ। তিনি বলেন, এতো এতো উন্নয়ন দিয়ে আমি কি করব? এটাকে কি রাস্তা বলা যায়? আমরা দিনকে দিন লজ্জাহীন হয়ে পড়েছি। হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে বাধ্য হয়ে চলাফেরা করছি। কিন্তু এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।
মনিরুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, ডিআইটি রোড থেকে মগবাজার পর্যন্ত সড়কের দুর্দশা আজকের নয়। রাস্তার দু’পাশে খোঁড়াখুঁড়িতে রাস্তাই যেন নাই হওয়ার দশা। তার ওপর বৃষ্টিতে রাস্তায় কোথায় যে গর্ত আর কোথায় যে নিচু তা বলা মুশকিল। তাই প্রাইভেটকার নিয়ে বের হইনি। হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছি।
Advertisement
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বনশ্রী ইস্টার্ন হাউজিং কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। যত্রতত্র ভবন ও ফ্ল্যাট নির্মাণ করলেও রাস্তা নির্মাণ ও পানি নিষ্কাশনের সঠিক কোনো প্ল্যান না থাকায় এর প্রভাব পড়ছে রাস্তায়। দু’ধারের বাড়ি ও মার্কেট উঁচু আর রাস্তা নিচু। যে কারণে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বলতে সব রাস্তার ওপর দিয়েই।
এ ব্যাপারে ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মঈনুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তার বেহাল দশা কিংবা সৃষ্ট যানজটের জন্য ট্রাফিক বিভাগের দায় নেই। বৃষ্টির কারণে রাস্তার খারাপ অংশ ডুবে গেছে। সাময়িকভাবে যান চলাচলে গতি কমেছে। রাস্তা সচল না হলে কিংবা রাস্তার যে বেহাল দশা তা ঠিক না হলে জনভোগান্তি কমবে না। তবে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ব্রি. জেনারেল মো. সাঈদ আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী।
জেইউ/ওআর/এমএস