জাতীয়

যুদ্ধ নয়, কূটনৈতিক তৎপরতায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

‘বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন কিংবা যুদ্ধ করে নয়, কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা হবে’- এমনটি জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

Advertisement

রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি জে ওয়ার্নারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা এসেছে। এর আগে ছিল প্রায় ছয় লাখ ২৫ হাজার। এরপরও তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিচ্ছি।

‘তবে বিশ্ববাসীকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ অব্যাহত রয়েছে’- যোগ করেন তোফায়েল আহমেদ।

Advertisement

তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি দল যে তারা সব বিষয়েই শুধু না বলেন। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও তারা রাজনীতি করছেন। অথচ তাদের আশ্রয় দেয়ায় সারাবিশ্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে।

‘নেগেটিভ মনোভাবের কারণেই বিএনপিকে মনুষ প্রত্যাখ্যান করেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কাল (মঙ্গলবার) পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাবেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের বিশ্বাস, কফি আনান কমিশন যে সুপারিশ করেছে, সেটি বিবেচনায় নিলেই এ গণহত্যা বন্ধ হবে।

‘আমাদের মধ্যে সভ্যতা আছে, মানবতা আছে। এ কারণেই আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। ১৬ কোটির বাংলাদেশে আরও তিন লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় আমরা দিতেই পারি। কারণ শরণার্থীদের দুঃখ-কষ্ট আমরা বুঝি। একাত্তর সালে আমাদের এক কোটি বাঙালি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল।’

Advertisement

তিনি বলেন, এ সময়ে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আজ (সোমবার) জাতীয় সংসদে আলোচনা হবে।

‘আগামীকাল ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আলোচনা করা হবে’ জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা পৃথিবী নানা দেশের আইন-কানুন মাথায় রেখেই এ নিয়ে আলোচনা করব।’প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট রাতে রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাক্যাম্পে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরএসএ)। ওই হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ ৮৯ জন মারা যায় বলে মিয়ানমার সরকারের ভাষ্য। এরপরই রাজ্যটিতে শুরু হয় সেনা অভিযান।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেনা অভিযানে রাখাইনে অন্তত তিন হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। আর প্রাণ বাঁচাতে সর্বস্ব হারিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন তিন লাখের অধিক রোহিঙ্গা। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন।

এমইউএইচ/এমএআর/এমএস