মানুষের অধিকার সংরক্ষণে ইসলামের বিকল্প নেই। কুরআনুল কারিমের পাতায় পাতায় তার অসংখ্য প্রমাণ এখনো বিদ্যমান। প্রাক ইসলামি যুগে যখন নারীদের ব্যাপারে কোনো বিধান বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি তখনও নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামের বিধান ছিল যুগোপযোগী।
Advertisement
তখনও কোনো নারী যেন কোনো পুরুষ বা স্বামীর পক্ষের লোকদের দ্বারা নির্যাতিত হতে না হয় বা জুলুমের শিকার হতে না হয়; সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা স্বামীদেরকে তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে নসিহত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা স্বামীর সম্পদে স্ত্রীর অধিকার সাব্যস্ত করেছেন। যার ফলে এ আয়াত রহিত হয়ে যায়। স্ত্রীর অধিকার ও বিধান সাব্যস্ত হওয়ার আগে আল্লাহ তাআলা নারীদের অধিকারের ব্যাপারে স্বামীদের প্রতি যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা কুরআনে এভাবে ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
Advertisement
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২৪০-২৪২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইসলামের প্রথম যুগে স্বামীদেরকে উদ্দেশ্য করে স্ত্রীদের ব্যাপারে অসিয়ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তখনো স্ত্রীদের ব্যাপারে কোনো বিধান বা স্বামীর সম্পদে স্ত্রীদের অধিকার সম্পর্কিত কোনো আয়াত নাজিল হয়নি।
ওই সময়টিতে যাতে করে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীরা তার (স্বামীর) আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারা নির্যাতিত না হয় এবং স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদ তথা অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। ভরণপোষণে কোনো ধরনে কষ্ট স্বীকার করতে না হয়, সে ব্যাপারে নসিহত পেশ করেছিলেন। পরবর্তীতে সুরা বাকারার ২৩৪ নং আয়াত দ্বারা এ আয়াতের বিধানকে রহিত (বাদ) করা হয়েছে।
আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছেতোমাদের মধ্য থেকে যারা মারা যায় এবং তাদের (মৃত্যুর সময়) পর তাদের স্ত্রীরা বেঁচে থাকে, তাদের স্ত্রীদের যাতে এক বছর পর্যন্ত ভরণপোষণ করা হয়। ওই সব স্বামীদের মৃত্যুর কারণে তাদের স্ত্রীদের যেন ঘর থেকে বের করে দেয়া না হয়। এ ব্যাপারে মৃত্যুর আগেই স্বামীদের অসিয়ত করে যাওয়া উচিত।
অতঃপর স্বামীর মৃত্যুর পর যদি কোনো স্ত্রী নিয়ম মেনে তথা ইদ্দত পালনপূর্বক নিয়মানুযায়ী নিজেদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাতেও কোনো পাপ নেই। স্ত্রীরা নিজেদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তই করুক না কেন তাতে তাদের ইখতিয়ার রয়েছে।
Advertisement
অতঃপর আল্লাহ তাআলা নিজেকে সব কিছুর ওপর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাশালী এবং তিনি অতি বিজ্ঞ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
২৪১ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তালাকপ্রাপ্তাদের ব্যাপারে বলেছেন, পরহেজগার স্বামীদের উচিত তারা যাদের তালাক প্রদান করেছে, তাদেরকে কিছু খরচ প্রদান করা হয়। কারণ এতে করে তালাকপ্রাপ্তা নারী সাময়িকভাবে মানসিক প্রশান্তি লাভ করবে। এর এ বিধানের মধ্যে রয়েছে সামাজিক অসংখ্য উপকারিতা।
অতঃপর আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণে অসংখ্য উপদেশ ও নসিহত পেশ করার কথা উল্লেখ করেছেন ২৪২নং আয়াতে।
আলোচ্য আয়াতগুলোর মাধ্যমেই বুঝা যায় যে, ইসলাম মানুষের অধিকারের ব্যাপারে কতটা সচেতন। ইসলামের সুমহান বাণী সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২৩৮-২৩৯ নং আয়াত
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের সুন্দর ও শাশ্বত বাণীগুলো অধ্যয়ন করে নিজেদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে সুন্দর করার তাওফিক দান করুন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান পতাকা তলে আশ্রয় দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস