মিয়ানমার থেকে উৎখাত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ‘পুশব্যাক’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। দেশটির রাজ্যগুলোকেও এই নীতি মেনে চলতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এ নির্দেশ মানতে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
Advertisement
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সরকারের শীর্ষ মহলের সিদ্ধান্ত, উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা এ রাজ্যে (পশ্চিমবঙ্গ) থাকতে চাইলে মানবিকতার খাতিরেই তাদের থাকতে দেয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই জোর করে ফেরত পাঠানো হবে না। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার ভাষায়, ‘রোহিঙ্গারা মুসলিম বলেই কেন্দ্র এমন অবস্থান নিচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র অমানবিক হলেও আমরা তা হতে পারব না।’
গত ২৫ আগস্ট পুলিশের উপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের চালানো হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হয়েছে। যার কারণে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশে শরণার্থীর স্রোত এখনো অব্যাহত। ভারতেও ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে বিভিন্ন খবরে বলা হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন। সেখানেই ভারতে আশ্রয় নেয়া সকল রোহিঙ্গাদের ‘পুশব্যাক’ করার নীতি ঘোষণা করে এসেছেন। তবে মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গা সংকট চরমে। যদিও আজ (রোববার) থেকে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা এক তরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এখনো বহু রোহিঙ্গা নিহত হচ্ছেন এবং সীমান্তের দুপাশেই তৈরি হয়েছে এক মানবিক পরিস্থিতি।
Advertisement
পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা তেমন নয়। বনগাঁ-বসিরহাট সীমান্ত এবং উত্তরবঙ্গ দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা ঢুকলেও তাদের অনেকেই এখন জেলে। অসম-দাঙ্গার পর উত্তরবঙ্গেও বেশ কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের কাউকেই ‘পুশব্যাক’ করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্যটিতে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি থাকা ২৩ জন মহিলা ও শিশুর পরিচয়পত্র বিতরণ বন্ধ রেখেছে। ইউনাইটেড ন্যাশন হাইকমিশন ফর রিফিউজি রোহিঙ্গাদের বিশেষ পরিচয়পত্র দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গেও তেমন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজ্যের মূখ্যসচিব মলয়কুমার দের নির্দেশে পরিচয়পত্র বিতরণ বন্ধ রয়েছে।
আরএস/এমএস
Advertisement