দেশ ছেড়ে আসা প্রত্যেক রোহিঙ্গার জীবন যেন একেকটি দুঃখগাঁথা উপাখ্যান। এমন সভ্য সমাজে মানুষ মানুষকে এভাবে নির্যাতন করতে পারে! মিয়ানমারের বৌদ্ধ আর সেনাবাহিনী মিলে নির্যাতনের সব হাতিয়ার প্রয়োগ করেছে রোহিঙ্গাদের ওপর।
Advertisement
হত্যা, জখম, ধর্ষণ, আগুন দেয়া, লুটতরাজ কিছুই বাদ রাখেনি সেনাবাহিনী। দেশ তাড়াতে যা করার সবই করেছে মগ আর মারমা বৌদ্ধরা।
সেনাবাহিনী আর মগদের নির্যাতনের ভয়ংকর বর্ণনা দিচ্ছিলেন রোহিঙ্গা নারী সাবেকুন্নাহার। তার বাড়ি মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের মন্ডু উপজেলার ফকিরাবাজার গ্রামে। ৩৫ বছর বয়সী সাবেকুন্নাহারের ঘরে এক মেয়ে ও দুই ছেলে। স্বামী-সন্তানকে নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ে তাঁবু গেড়েছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নির্যাতিতা এই নারী বলেন, ঈদের তিনদিন পরের ঘটনা। বিকেলে টুপি মাথায় দিয়ে বেশ কয়েকজন অপরিচিত লোক আমাদের গ্রামে প্রবেশ করে। চারজন আমাদের বাড়িতেও আসে। পরে বুঝতে পারি মুসলমানের বেশ ধরে বৌদ্ধ মগরা এসেছে। এর কিছুক্ষণ পরই গ্রামে হৈ-চৈ পড়ে যায়। বাড়ি-ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। চারদিকে গুলির শব্দ।
Advertisement
ক্ষোভ আর ঘৃণা ভরে নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, যে চারজন এসেছিল, তারাই আটক করে বাড়ির উঠানে বেঁধে ফেলে আমাকে। সেখানে পাশের বাড়ির আরেক তরুণীকে এনে বিবস্ত্র করে। এরপর মগরা সেই নারীকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। আমার চোখের সামনেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে সেই তরুণীকে।
একপর্যায়ে তাকেও বিবস্ত্র করা হয় বলে উল্লেখ করে বলেন, জোর করে আমার শরীরের সব কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় ব্যাপক মারপিটও করতে থাকে সেনারা। ইতোমধ্যে আমাদের বাড়িতেও আগুন লেগে যায়। মাথার ওপর দিয়ে গুলি যেতে থাকে। এলোপাতাড়ি দৌড়াদৌড়ি শুরু করতে থাকে সবাই।
আমি ধর্ষকের হাত কামড়ে পালাই। আর ঘরবাড়ির খবর নিতে পারি নাই। সেই ধর্ষিতা নারীকে হত্যা করল নাকি পুড়ে মারল, তার আর খবর পাইনি।
এএসএস/ওআর/আরআইপি
Advertisement