অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষ। ঘরের মাঠে এই সিরিজ শুরুর আগে আলোচনার মূল কেন্দ্রে ছিল, উইকেট কেমন হবে এবং বোলিং কৌশল কী হবে। সাধারণত উপমহাদেশের উইকেট যেমন হয়, স্লো-লো এবং স্পিনিং- তেমন উইকেটই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ কারণে স্পিন নির্ভর বোলিং শক্তি নিয়েই বাংলাদেশে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশও পেস নির্ভরতা কমিয়ে স্পিন নির্ভর বোলিং আক্রমণ সাজিয়ে তোলে।
Advertisement
ঢাকা টেস্টে স্পিনাররাই জিতিয়েছে বাংলাদেশকে। চট্টগ্রাম টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছে সেই স্পিনাররাই। নাথান লিওন একাই নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট।
এই সিরিজ শেষ। আপাতত এটা নিয়ে চিন্তাও শেষ। সামনে চিন্তা শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নিয়ে। যেখানে দুটি টেস্ট, তিন ওয়ানডের সঙ্গে রয়েছে দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচও। অথ্যাৎ পুরোপুরি একটা পূর্ণাঙ্গ সিরিজ।
বাংলাদেশের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন কন্ডিশন দক্ষিণ আফ্রিকায়। এক কথায় পেসারদের স্বর্গরাজ্য। কাগিসো রাবাদা, ভারনন ফিল্যান্ডার, মরনে মর্কেল, কাইল অ্যবোট, ক্রিস মরিসদের মত পেসাররা রয়েছে প্রোটিয়া দলে। সঙ্গে কার্যকরি স্পিনার হিসেবে রয়েছেন শুধুমাত্র ইমরান তাহির।
Advertisement
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দলে পেসার ছিলেন তিনজন। মোস্তাফিজুর রহমান , শফিউল ইসলাম এবং রুবেল হোসেন। এর মধ্যে ঢাকা টেস্টে খেলানো হয়েছে দুই পেসারকে এবং চট্টগ্রাম টেস্টে খেলেছেন শুধুই মোস্তাফিজ। ঢাকা টেস্টে দুই পেসার মিলে একটিও উইকেট নিতে পারেননি পেসাররা। মোস্তাফিজ সব মিলিয়ে বোলিং করেছেন ১৪ ওভার।
দ্বিতীয় টেস্টে মোস্তাফিজ একার ঘাড়েই পেস ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম টেস্টেই নিজেকে দারুণভাবে চিনিয়েছেন মোস্তাফিজ। দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। দুই ইনিংসেই ফিরিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারকে।
১৬ সেপ্টেম্বরই দক্ষিণ আফ্রিকায় পূর্ণাঙ্গ সিরিজ উপলক্ষে ঢাকা ত্যাগ করার কথা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। ২১ সেপ্টেম্বর বেনোনিতে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। এ উপলক্ষ্যে আজই (শনিবার) দল ঘোষণা করার কথা। আগেরদিনই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদনি নান্নু মিডিয়াকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ পেস শক্তির ওপরই নির্ভর করতে চায়।
তিনি নির্দিষ্ট করেই বলে দিয়েছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৫জন পেসার নিয়েই দল গঠন করা হবে। স্পিনার থাকছেন শুধুমাত্র একজন। বাকিরা ব্যাটসম্যান।’
Advertisement
দক্ষিণ আফ্রিকার গতিময় বাউন্সি পিচেই হবে বাংলাদেশের পেসারদের আসল পরীক্ষা। একই সঙ্গে পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের মূল পরীক্ষাটাও হবে সেখানে। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেয়ার পর এখনও নিজের শক্তির আসল রূপ দেখানোর সুযোগ পাননি ওয়ালশ। ঘরের মাঠে খেলা হলে, সেখানে থাকে স্পিন নির্ভর উইকেট। সে ক্ষেত্রে পেসারদের জন্য অবশ্যই দুর্দশা তৈরি হয় এসব উইকেটে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় যেহেতু বাউন্সি উইকেট। গতিময় এসব উইকেটে মোস্তাফিজ, তাসকিন, রুবেল, শফিউল কিংবা কামরুল ইসলাম রাব্বিদের দিতে হবে আসল পরীক্ষা। নিজেদের প্রস্তুতি এবং শিক্ষার প্রয়োগ ঘটানোর আদর্শ স্থানই পাবেন বাংলাদেশের পেসাররা। শুধু নিজেদের প্রমাণ করে দেখাতে হবে তাদের, যে আমরাও পারি।
আইএইচএস/আইআই