বিশেষ প্রতিবেদন

স্কুল হেলথ ক্লিনিক চালুর দাবিতে বছরব্যাপী কর্মসূচি পালনের ঘোষণা

স্কুল হেলথ ক্লিনিক চালু ও মুমুর্ষু রোগীদের জন্য সরকারিভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিশ্চিত করার দাবিতে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটি। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘স্বাস্থ্য বাজেট ২০১৪-১৫: প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক বিএমএ নেতা অধ্যাপক ডা. রশীদ ই মাহবুব এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন।  নেতারা বলেছেন, সারাদেশের স্কুলগুলোতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সুব্যবস্থা নেই। এছাড়া মুমুর্ষু রোগীদের আনা-নেয়ার জন্য বানিজ্যিকভাবে পরিচালিত প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।  অধ্যাপক ডা. রশীদ ই মাহবুব ‘অব্যবস্থাপনা’কে বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করে বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার নামে সরকার যে টাকা ঢালছে তার বেশীর ভাগই অপচয় হচ্ছে।তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাজেট নির্ধারণের আগে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয় না। বেসরকারি পর্যায়ে যারা দীর্ঘদিন যাবৎ স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছেন, জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে আসছেন তাদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। দাতা প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ফর্মুলা অতীতেও আমাদের কাজে লাগেনি, ভবিষ্যতেও লাগবে না।ডক্টরস্ ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট`র সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহার এর সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও বিএমএ-র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব।সভায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অধ্যাপক নাজমুন নাহার সভাপতির বক্তব্যে বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্ধ বাড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পকৃত মন্ত্রণালয়গুলোকেও স্বাস্থ্যসেবার কাজে সংযুক্ত করার আহ্বান জানান।ডা. মো. আবদুল মতিন বলেন, প্রতি অর্থবছর মোট বাজেটের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে সেই হারে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ছে না। সরকারকে মনে রাখতে হবে একটি সুস্থ জাতি গঠন করতে পারলেই দেশ অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হবে। এ জন্য অবশ্যই বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে।ডা. লেলিন চৌধুরী ‘কেন স্বাস্থ্য খাতে বাজেট জিডিপি’র মাত্র ১ শতাংশ’ সরকারের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখে বলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দিনবদলের যে স্বপ্ন দেখিয়ে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের সে স্বপ্ন ভেঙে গেছে।তিনিও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের দুরবস্থার জন্য অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন। এছাড়া এ বিষয়ে একটি জাতীয় ঐক্য গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আবদুল মতিন। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার তৌফিক মারুফ, ডক্টরস্ ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এর সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. এম আবু সাঈদ, অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস ও হেলথ রিপোর্টার মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল প্রমুখ।এক নজরে জাতীয় বাজেট ‘২০১৫-২০১৬’ বরাদ্দ চিত্র ও স্বাস্থ্য খাতরাষ্ট্রীয় মোট জিডিপির পরিমাণ : ১৭,১৫,৬৯৮ কোটি টাকা।মোট বাজেট বরাদ্দ পরিমাণ : ২,৯৫,১০০ কোটি টাকামোট স্বাস্থ্য বরাদ্দে জিডিপির অংশ : ০০.৭৩ শতাংশ মোট স্বাস্থ্যবরাদ্দ, মোট বাজেট বরাদ্দের : ৪দশমিক ৩০ শতাংশএমইউ/আরএস/আরআইপি

Advertisement