মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধিবাসীদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর চলমান হত্যা-নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আশ্রয় নিতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে অন্তত ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা।
Advertisement
শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
এদিকে, এখন পর্যন্ত অন্তত রাখাইনে এক হাজার রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের অধিকাংশই মুসলিম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এরআগে এক লাখ ৬৪ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশের কথা বলেছিল জাতিসংঘ। তবে সীমান্তের আরও কিছু পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা আসতে থাকায় এ সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তা ভিভিয়ান তান।
Advertisement
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সংস্থার সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে ইউএনসিএইআর জানায়, কক্সবাজারে দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের ঢল আসার আগে প্রায় ৩৪ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করতেন। গত ২৫ আগস্ট থেকে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে ৭০ হাজার হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গাই নারী-শিশু ও বয়স্ক মানুষ। এরা সবাই পরিশ্রান্ত ও প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। এসব মানুষ কয়েকদিন ধরে জঙ্গল, পাহাড় পেরিয়ে পায়ে হেঁটে, অনেকে নৌকায় চেপে কক্সবাজারে আসছে। নাফ নদী পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবে প্রায় প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।
রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে সম্প্রতি রাজ্যে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। গত ২৪ আগস্ট রাতে একযোগে কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে বিদ্রোহী রোহিঙ্গারা হামলা করে। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সদস্যসহ বেশকিছু রোহিঙ্গা নিহত হয়।
ওই ঘটনার পর রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন, নারীদের ধর্ষণ ও হত্যা এবং গুলি করে রোহিঙ্গাদের হত্যাসহ ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু করে সেনাবাহিনী। প্রাণে বাঁচতে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশ সীমান্তে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। শুরুতে তাদের প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হলেও এখন বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ফলে মাত্র দুই সপ্তাহে এ সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
Advertisement
এসআর/এমএস