খেলাধুলা

এবার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দাবি করতে পারে বাংলাদেশ

একটা সময় ছিল, অনেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট খেলতে চাইতো না। বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট খেললে সেটা দুদিনেই শেষ হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ টেস্ট খেলতে পারে না। সে যোগ্যতা তাদের নেই- এমনই অনেক অভিযোগ ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়া তো এ কারণেই প্রায় এক যুগ পর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেললো।

Advertisement

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এবার এসে দেখলো উল্টো চেহারার বাংলাদেশকে। ঢাকা টেস্টে তো তারা হেরেই গিয়েছে। চট্টগ্রাম টেস্টে গিয়ে দারুণ লড়াইয়ের পর অবশেষে জিতেছে।

ঘরের মাটে গত দুটি টেস্ট সিরিজই ড্র হয়েছে। এর মাঝে, গত মার্চ-এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজটিও ড্র হয়েছে ১-১ ব্যবধানে। অথ্যাৎ, নিউজিল্যান্ড এবং ভারত সফর বাদ দিলে গত অক্টোবরের পর থেকে তিনটি সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলিন শ্রেণি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং সঙ্গে শ্রীলঙ্কা।

২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হলে তার অধিকাংশই এখন অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে। সিরিজের মীমাংসার জন্যই হোক, কিংবা বাংলাদেশ মিনোজ থেকে এলিট পর্যায়ে উঠে আসাই হোক- এবার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দাবি অনায়াসেই করতে পারে বাংলাদেশ। বিশেষ করে নিজেদের কন্ডিশনে।

Advertisement

আরও একটি কারণে বাংলাদেশ এখন তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দাবি করতে পারে। সেটা হচ্ছে টেস্টে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা তৈরি করতে পারার সক্ষমতা অর্জন করা। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১ বছরে অন্তত দুটি ম্যাচ খুব ক্লোজ পজিশনে নিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট অন্যতম। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়েছে মাত্র ২২ রানে।

প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সামনে মাত্র ২৮৬ রানের লক্ষ্য বেধে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও জয়ের আশা ক্ষণিকের জন্যও ছাড়েনি।

দ্বিতীয় যে ম্যাচটি ক্লোজ হয়েছে, সেটা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট। দ্বিতীয় ইনিংসে ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি অস্ট্রেলিয়াকে পেছন থেকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে এসেছিল প্রায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতেছে ২০ রানের ব্যবধানে। চট্টগ্রাম টেস্টে ৭ উইকেটে বাংলাদেশ হেরে গেলেও চতুর্থদিন সকাল পর্যন্ত মনে হচ্ছিল ম্যাচটাতে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। কিন্তু একা এক নাথান লিওনই শেষ মুহূর্তে সব প্রতিরোধ ভেঙে দিলো। না হয়, এই ম্যাচটিও ক্লোজ পর্যায়ে চলে এসেছিল প্রায়।

তৃতীয় যে কারণে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দাবি করতে পারে বাংলাদেশ, সেটা হচ্ছে- বাংলাদেশের দর্শক। ক্রিকেট এখানে এতই জনপ্রিয় যে এ ক্ষেত্রে উপমহাদেশের অন্য দুই দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে বাংলাদেশ। যদিও ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টির চেয়ে টেস্টে দর্শক কমই হয়; কিন্তু এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দেখা গেলো মাঠে প্রচুর দর্শক। প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছে মাঠে।

Advertisement

চট্টগ্রামে তো আরও বেশি। টেস্ট ম্যাচে চারদিনই দেখা গেছে স্টেডিয়াম প্রায় অর্ধেক পূর্ণ। এ কারণেই এখন প্রত্যাশা, সিরিজ আরেকটু লম্বা হলে, বাংলাদেশ প্রতিনিয়তই যেহেতু ভালো করছে- তাতে দর্শকও আরও বেড়ে যাবে। তাতে সন্দেহ নেই।

আইএইচএস/এমএস