জঙ্গি দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে বেরিয়ে আসছে একের পর এক জঙ্গি আস্তানা। এবার রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোডে পাওয়া গেল জঙ্গি আস্তানা। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সোমবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ঘিরে ফেলা হয় মাজার রোডের ছয়তলা ভবন কমল প্রভা। ওই ভবনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও সহযোগীসহ দুর্ধর্ষ ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ অবস্থান করছিলেন। সেখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকও মজুদ ছিল বলে র্যা বের দাবি। পরবর্তীতে তাদের আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা আত্মঘাতী হন। এতে দুই শিশুসহ ভেতরে থাকা সবার মৃত্যু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবারও চলে অভিযান। জঙ্গি দমনে এ ধরনের অভিযানের বিকল্প নেই। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে জঙ্গিদের অপতৎপরতা নস্যাৎ করে দিতে হবে। দেশকে জঙ্গিমুক্ত রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।
Advertisement
জঙ্গিবাদের সমস্যা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। বৈশ্বিক এই সমস্যা নিরসনে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে সরকার। এ কারণে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সাফল্য দেখাচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি জঙ্গি নিপাত করা যায়নি। জঙ্গিবাদের পেছনে রয়েছে দেশি বিদেশি নানাচক্রও। জঙ্গিদের অর্থের উৎসব বন্ধ করা জরুরি। বন্ধ করতে হবে অস্ত্রের সরবরাহও। জঙ্গিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন আরো জোরদার করাটাও এখন সময়ের দাবি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে হবে এটা ঠিক কিন্তু জঙ্গিবাদ শুধু আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা নয়। তাই প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ। অভিযানে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে আরো সতর্ক থাকতে হবে। সক্ষমতা বাড়াতে হবে আরো।
দেখা যাচ্ছে গোটা পরিবারই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে। নারী ও শিশুরাও জঙ্গিবাদের অভিশাপে জড়িয়ে যাচ্ছে পরিবারের কারণে। ধনাঢ্য পরিবারের পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায়দের ভেড়ানো হচ্ছে জঙ্গিবাদে। এ ব্যাপারে গভীর চিন্তাভাবনা করতে হবে। জঙ্গিতৎপরতা নজরে এলেই সেটি বন্ধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। জঙ্গিবাদ সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়াক এটা কখনো কাম্য হতে পারে না। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। কারণ জঙ্গিবাদ উন্নয়ন ও প্রগতির অন্তরায়। এর অভিশাপ থেকে কেউ মুক্ত নয়। তাই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
Advertisement
এইচআর/এমএস