শিরোনাম পড়ে নিশ্চয়ই ধাঁধায় পড়ে গেছেন তাই না? ভাবছেন এটা আবার কেমন কথা? বাংলাদেশের লিড থাকে কি করে? অস্ট্রেলিয়াতো এরই মধ্যে ৭২ রানে এগিয়ে গেছে। তাহলে বাংলাদেশ আবার এগিয়ে থাকে কিভাবে?
Advertisement
হ্যাঁ, শিরোনাম পড়ে বিষয়টাকে জটিল মনে হলেও আসলে ব্যাপারটা ‘পানির’ মত সহজ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ওয়ার্নার করেছেন ১২৩; দুবার জীবন পেয়ে। প্রথমে ৫২ রানে। আর পরেরবার ৭৩’এ।
প্রথমবার বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ ফেলে দেন মুমিনুল। এরপর ওয়ার্নার নতুন জীবন পান টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের হাতে। বোলার ছিলেন মিরাজ। আগের দিন এই দু’বার আউট হবার হাত থেকে বেঁচে ওয়ার্নার করে গেছেন ১২৩ রান।
প্রথমবার মানে ৫২তে আউট হয়ে গেলে, ৭১ রান কম হতো অস্ট্রেলিয়ার। পরেরবার ৭৩’এ যদি সাজঘরে ফিরতেন, তাহলে ৫০ রান কম হতো অসিদের। এখানেই শেষ নয়। এ টেস্টে ক্যাচ ফেলার মহড়া দেয়া টাইগার ফিল্ডাররা আরও ক্যাচ ফেলেছেন।
Advertisement
আজ মোস্তাফিজের বলে গালিতে ম্যাক্সওয়েলে ক্যাচ ফেলে দেন মুমিনুল। ১০ রানে গালিতে মিরাজের হাতে জীবন পাওয়া ম্যাক্সওয়েল শেষ পর্যন্ত আউট হন ৩৮ রান করে। মানে এ অজি মিডল অর্ডারও পান ২৮ রান বোনাস।
ওয়ার্নারের পরেরটাই নেয়া যাক। তাহলে ৫০ রান আর ম্যাক্সওয়েলে ২৮। যোগ করলে হয় ৭৮। এই ৭৮’র সাথে আরও ১২ রান যোগ হবে। বলবেন কিভাবে? একটু মনে করার চেষ্টা করুন। না হয় ক্রিকইনফো ব্রাউজ করে বল টু বল কমেন্ট্রিতে যান। দেখবেন পরিষ্কার লিখা আছে। সাকিব আল হাসানের বলে ৬ রানে জীবন পেয়েছেন কার্টরাইট। স্লিপে দাঁড়িয়ে ম্যাচের সহজতম ক্যাচটি ধরেও ফেলে দেন সৌম্য সরকার। সেই কার্টরাইট পওে মিরাজের বলে বোল্ড হন। ততক্ষণে তার নামের পাশে যোগ হয়েছে ১৮। মানে ১২ রান বোনাস।
তাহলে কি দাঁড়ালো? ওয়ার্নার ৫০, ম্যাক্সওয়েল ২৮ আর কার্টরাইট ১২। মোট ৯০ রান। তৃতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ৭২ রানে। ৯০ থেকে ৭২ বিয়োগ করুন। উল্টো বাংলাদেশ ১৮ রানে এগিয়ে থাকতে পারতো।
এখন কি খুব জটিল ও গোলমেলে মনে হচ্ছে? এতটুকু পড়ে কেউ কেউ হয়ত বলবেন, ‘আরে ক্যাচ মিস তো খেলারই অংশ।’ তা বলতেই পারেন। ক্যাচ ফেলা অবশ্যই খেলার অংশ। সে ক্যাচ ধরে ফেললে যেমন জয় ত্বরান্বিত হয়, আবার তা ফেললে বা হাতছাড়া করলে ম্যাচ হাতছাড়ার উপক্রম হয়। চড়া মাশুল গুণতে হয়।
Advertisement
ক্রিকেটীয় পরিভাষায় দু’রকম কথাই প্রচলিত আছে। ‘ক্যাচেস ওন দ্য ম্যাচেস।’ আবার এও বলা হয়, ‘ক্যাচ ড্রপ পার্ট অব গেম।’
এ দুই কথার ব্যবচ্ছেদ করলে কি দাঁড়ায়? ক্যাচ ম্যাচ জেতায়। মানে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে উঠে আসা ক্যাচ তালুবন্দী করতে পারলে ম্যাচ জেতা যায়। আবার ক্যাচ যে হাত থেকে পড়ে যায়, সেটাও অস্বাভাবিক নয়। খেলারই অংশ।
তবে ক্যাচ ধরতে না পারার চড়া মূল্যও দিতে হয়। যেমন দিল মুশফিক বাহিনী। না হয় আজই অলআউট হয়ে যেত স্মিথের দল। ১৮ রানে এগিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার সুযোগ থাকতো মুশফিক বাহিনীর সামনে।
এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম