রাজনীতি

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলে ধরুন

চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে সরকার যেমন ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে।

Advertisement

তিনি অবিলম্বে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলে ধরতে জোর দাবি জানান। বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার (আওয়ামী লীগ) জনগণের সরকার নয়। কোনো বৈধ সরকার নয়। তারা বেআইনিভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা বলে, সেই নির্বাচন সংবিধান সম্মত। অথচ জনগণের ম্যান্ডেট তাদের নেই। যেহেতু জনগণ তাদের কোনো ভোট দেয়নি সেই জন্য আমরা এই সরকারকে বৈধ সরকার বলে মানি না।

Advertisement

এমনকি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণে বেরিয়ে এসেছে যে, এখন যে সংসদ আছে, সরকার গঠন করা হয়েছে সেই সংসদের ওপর আস্থা রাখা যায় না। কেননা তারা সঠিকভাবে বৈধ পথে নির্বাচিত নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে এই সরকার সুশাসন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মানুষকে কোনো রকম স্বস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দুই বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ কেউ নিরাপদ নয়। ধর্ষণ, গুম ও খুন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁয়িছে। তাদের (সরকার) অবদান হচ্ছে মায়ের কোল খালি করে দেয়া। সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে, বোনের কাছ থেকে ভাইকে কেড়ে নেয়া। কাউকে হত্যা, গুম, খুন করলেও তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না।

রাস্তার চেয়েও বেহাল অবস্থা বিএনপির, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির বেহাল অবস্থা নয়, বেহাল অবস্থা আপনাদের( আওয়ামী লীগ)। আর সেজন্য যা খুশি তাই বলতে শুরু করেছন। বিচার বিভাগ, প্রধান বিচারপতিকে অপমান করছেন। কাউকে বাকি রাখেননি। অপমান করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে। শুধু তাই নয় যারা এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরকেও অপমান করেছেন।

বাংলাদেশ কারও একার দেশ নয় এবং মুক্তিযুদ্ধ একা কেউ করেনি- এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব ছিল। আমরা স্বীকারও করেছি। কিন্তু এককভাবে দাবি করা সেটা টিক নয়। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ, তারা নিজেদের ছাড়া কাউকে চেনে না। অন্য কোনো মত সহ্য করতে পারে না। এজন্য সকল দল নিষিদ্ধ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল।

Advertisement

‘আওয়ামী লীগ সব দিক থেকে ব্যর্থ’- আখ্যা দিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা বন্দুক-পিস্তল দেখিয়ে বিরোধী দল ও বিরোধী মতকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। সেই সুযোগ নিয়ে সমগ্র মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে একতরফা কথা বলে যাচ্ছে। তারা আবারও একটা একতরফা নির্বাচনের পায়তারা করছে। তারা ভাবছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মতো আরেকটা নির্বাচন করবে। নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ দেশের মানুষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন আর করতে দেবে না।

অবশ্যই নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অবশ্যই নিরপেক্ষ ইসির পরিচালনায় নির্বাচন হতে হবে। তা না হলে সেই নির্বাচন এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’

এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততই বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ নিচের দিকে যাবে। দেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা থাকবে না- যোগ করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, সরকার তারেক রহমানকে ভয় পায়। ভয় পাওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে খালেদা জিয়া যে পতাকা তুলে দিয়েছেন সেই পতাকা হাতে যখন তিনি দেশে ফিরবেন তখন জনগণের যে ঢল নামবে তা প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের কোনো শক্তি থাকবে না। ঢাকা মহানগর বিএনপি (উত্তর) সহ-সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আবুল বাশার, যুবদল উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

এমএম/এমএমএআর/জেআইএম